একই দিনে বাংলা সাহিত্যের দুই নক্ষত্রের জন্ম-মৃত্যু
কবি শামসুর রাহমান বাংলাদেশের কবিদের মধ্যে অন্যতম একজন। আজ (২৩ অক্টোবর) কবির রাহমানের ৯১ তম জন্মদিন।
১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকার মাহুতটুলির ৪৬ নম্বর বাড়িতে কবি শামসুর রাহমান জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মুখলেসুর রহমান চৌধুরী এবং মায়ের নাম আমেনা খাতুন। আর ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট কবি চিরবিদায় নেন। তার শেষ ইচ্ছানুযায়ী ঢাকার বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
ব্যক্তিজীবনে শামসুর রাহমান পেশায় ছিলেন সাংবাদিক। ১৯৫৭ সালে দৈনিক মর্নিং নিউজ-এ সহসম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত রেডিও পাকিস্তানের অনুষ্ঠান প্রযোজক ছিলেন।
তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬০ সালে। জীবিত অবস্থাতেই ১১২টি বই প্রকাশ পায়। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য কবি আদমজী পুরস্কার, বাংলা একাডেমী পুরস্কার, জীবনানন্দ পুরস্কার, একুশে পদক, আবুল মনসুর স্মৃতি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন।
জানাযায়, শামসুর রাহমান মজলুম আদিব (বিপন্ন লেখক) ছদ্মনামেও লিখতেন। তিনি একজন আধুনিক কবি হিসেবে বাংলাসাহিত্যে বেঁচে থাকবেন আরো অনেকদিন।
অন্যদিকে, আজ একই দিনে বাংলা সাহিত্যের এক অন্যতম নায়ক, বাংলা ভাষার জনপ্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর ইহলোক ত্যাগ করেন।
তার জন্ম অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুরে। দেশবিভাগের পর মাত্র চার বছর বয়সে তিনি কলকাতায় বাবা মা’র সাথে চলে যান। সেকারণেই হয়তো সুনীলের অগাধ টান ছিলো বাংলাদেশের প্রতি। এক বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলা সাহিত্যের রাজধানী কোলকাতা নয়, ঢাকাই হবে।’
জন্মভূমির টানে বহুবার তিনি ফিরে এসেছেন বাংলাদেশে। এই আসা-যাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের লেখক-শিল্পীদের সঙ্গেও গড়ে উঠেছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। বিশষ করে হুমায়ুন আহমেদের সাথে তার ছিল নিবিড় সম্পর্ক। দুই শতাধিক বইয়ের রচয়িতা সুনীল ১৯৬৭ সালে বিয়ে করেন স্বাতী বন্দোপাধ্যায়কে।
সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭২ ও ১৯৮৯ সালে দুই দফা আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, ২০১১ সালে দ্য হিন্দু লিটারেরি পুরস্কারসহ জীবনভার বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন। দায়িত্ব পালন করেছেন ভারতের জাতীয় সাহিত্য প্রতিষ্ঠান সাহিত্য আকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ শিশুকিশোর আকাদেমির সভাপতি হিসেবেও।
পেশা হিসাবে সুনীলও বেছে নিয়েছিলেন সাংবাদিকতা। ভারতের সর্বাধিক পঠিত বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন।