
বাংলাদেশ প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ নিয়ে ‘সেন্টার ফর ল সাস্টেইনেবিলিটি এন্ড পিস (ক্লাস্প) এবং ‘লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ (এলসিএলএস) এর যৌথ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি ক্লাস্প ও এলসিএলএস এর (সাউথ) যৌথ উদ্যোগে রাজধানী ঢাকার একটি হলে এ আয়োজন করা হয়। ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক আইনের প্রযোজ্যতা’ শীর্ষক এ কর্মশালায় অংশ নেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। এসময় বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সংগঠিত ঝুঁকি এবং এর প্রভাব কমাতে আইনগত পথ অনুসন্ধানের লক্ষ্যে কাজ করার আহবান জানান বক্তারা।
জানা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম স্থানে বাংলাদেশ এবং আগামীতে এই ঝুঁকি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে পড়া দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশ পঞ্চম স্থানে রয়েছে। দেশটি পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপ। যেখানে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা-গঙ্গা, সুরমা-মেঘনা, পদ্মা-মেঘনা ও কর্ণফুলী নদীসহ বেশ কয়েকটি প্রধান নদী রয়েছে। এই বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এটি নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়। যে কারণে কর্মশালাটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আইনগত কাঠামোর জরুরি প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খালেদ হামিদ চৌধুরী কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন। কর্মশালায় গবেষক, শিক্ষক ও আইনজীবী ড. মোঃ মাহতাব উদ্দিন এবং আইনজীবী ও গবেষক ব্যারিস্টার নূর পুণম বক্তব্য রাখেন। নরডিক অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণ করা এই দুই বক্তাই নরডিক-শৈলীর আঙ্গিকে সহশিক্ষণের পরিবেশ সৃষ্টি করেন। কানাডার গুয়েলফ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পোস্ট ডক্টরাল গবেষক ড. মোঃ মাহতাব উদ্দিন তার উপস্থাপনায় আন্তর্জাতিক জলবায়ু আইনের কার্যাবলী ও রূপরেখা তুলে ধরেন। এছাড়াও তিনি প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং মেধাসত্ত্ব আইনের গুরুত্বের ওপরও জোর দেন। এসময় এলসিএলএস (সাউথ) এর প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও লাপল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক ব্যারিস্টার নূর পুণম আন্তর্জাতিক জলবায়ু আইনের কাঠামোর মধ্যে জলবায়ু অভিযোজনের সাথে স্থানীয় জ্ঞানের সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করেন।
প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী এবং এলসিএলএস-এর শিক্ষকেরা এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। এসময় বাংলাদেশের জলবায়ুর সম্ভাব্য পরিণতি নিয়েও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন তারা। অংশগ্রহণকারীরা, বাংলাদেশের মতো জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব সম্পর্কেও প্রশ্ন তোলেন।
পরে ক্লাপস-এর গবেষক এবং এলসিএলএস-এর শিক্ষকেরা আন্তর্জাতিক জলবায়ু আইনের বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে ধারাবাহিক বক্তৃতা দেন। তাদের এই যৌথ প্রচেষ্টা স্থানীয় ও বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আইনগত গবেষণার গুরুত্বকেও সামনে নিয়ে আসে।
এসআর /বাংলা টিভি