fbpx
খেলাধুলাক্রিকেটবাংলাদেশ

সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করলো টাইগাররা

সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করলো টাইগাররা, জিম্বাবুয়েকে ৫ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ এই জয়ে স্বাগতিকদের ধবলধোলাই করার স্বাদ পেল বাংলাদেশ।২০০৯ সালের পর বিদেশের মাটিতে প্রতিপক্ষকে প্রথমবার ধরলধোলাই করলো বাংলাদেশ।  জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের পঞ্চাশতম ওয়ানডে জয়। এই প্রথম কোনো দলের বিপক্ষে জয়ের ফিফটি পারল বাংলাদেশ।

সিরিজ জেতায় আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের ৩০ পয়েন্টের সবকটি পেল বাংলাদেশ। ৮০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় স্থানও সংহত হলো। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে সব উইকেট হারিয়ে ২৯৮ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় তামিমবাহিনী। এই জয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল সফরকারীরা।

জিম্বাবুয়ের দেওয়া ২৯৯ রানের বড় টার্গেট তাড়ায় ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ও লিটনের জুটিতে আসে ৮৮ রান। ৪৬ বলে তামিম দেখা পান ফিফটির। লিটনও ছুটছিলেন ফিফটির দিকে। কিন্তু ওয়েসলি মাধেভেরের বলে সুইপ শট খেলতে গিয়ে স্কয়ার লেগে থাকা মারুমানির হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ডানহাতি।

লিটনের বিদায়ের পর তিনে নামা সাকিবও দারুণ শুরু করেছিলেন। তামিমের সঙ্গে গড়েছিলেন ৫৯ রানের জুটি। তবে আগের ম্যাচে অপরাজিত ৯৬ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলা সাকিব এই ম্যাচে পারেননি। ব্যক্তিগত ৩০ রানে লুক জঙওয়ের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক চাকাভার হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে ৪২ বলে খেলে ১টি চার ও ১ টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

সাকিব বিদায় নেওয়ার আগেই আগ্রাসী ব্যাটিং করে তামিম তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১৪তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। মাত্র ৮৭ বল খেলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় তিন অংকে পৌঁছান তিনি। তবে এরপর বেশিদূর যেতে পারেননি তামিম। তিরিপানোর বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক চাকাভার হাতে ক্যাচ দিলে শেষ হয় তার ৯৭ বলে ১১২ রানের ইনিংস, যেখানে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কার মারও আছে। তারপরের বলেই মাহমুদউল্লাহ হাঁটেন ড্রেসিং রুমের পথে।

চাপে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন ও দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা নুরুল হক সোহান। একদিকে সোহান আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও মিঠুন খেলছিলেন দেখেশুনে। আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিও স্পষ্ট হয়ে উঠছিল মিঠুনের ব্যাটিংয়ে। শেষ পর্যন্ত দলকে ২৬৮ রানে রেখে মাধেভেরের বলে চাতারার হাতে ক্যাচ তুলে দিলে শেষ হয় তার ৫৭ বলে মাত্র ১ চারে সাজানো ৩০ রানের ইনিংস।

মিঠুন ফিরলেও অপরপ্রান্তে রানের চাকা সচল রাখেন নুরুল হাসান। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যটা বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে ছুটে যেতে পারেনি। শেষ ৩ ওভারে জিততে দরকার ছিল মাত্র ১৩ রান। আফিফ হোসেন ধ্রুবকে নিয়ে যা দেখেশুনে খেলে পেরিয়ে যান সোহান। আফিফ ১৭ বলে ২৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন আফিফ। অন্যদিকে সোহান অপরাজিত থাকেন ৩৯ বলে ৪৫ রান নিয়ে।

এর আগে টসে জিতে শুরুতে ফিল্ডিং বেছে নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরুর দিকে আঘাত হানেন সাকিব। উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলেন রেগিস চাকাভা ও তাদিওয়ানাশে মারুমানি। প্রথম ৮ ওভারে কোনো সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। ইনিংসে নিজের প্রথম ওভারে আক্রমণে এসেই দলকে উল্লাসের উপলক্ষ এনে দেন সাকিব। আউট হওয়ার আগে খেলা ১৯ বলে ৮ রান করতে পেরেছেন জিম্বাবুয়ের বাঁহাতি ওপেনার মারুমানি।

এরপর টেইলর ও চাকাভা ৪২ রানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে টেইলর ২৮ রানের ইনিংস খেলে ২০০তম ওয়ানডে খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহর শিকার হন। তবে চারে নামা মায়ার্সকে নিয়ে ফের রানের চাকা সচল রাখেন চাকাভা। তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ওয়ানডে ফিফটি। দুজনের জুটিতে আসে ৭১ রান। মায়ার্সকে বোল্ড করে এই জুটিও ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। পরের ওভারে ওয়েসলি মাধেভেরেকে (৩) সাকিবের ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন ইনজুরির কারণে প্রথম দুই ম্যাচ মিস করা মোস্তাফিজুর রহমান।

১৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা জিম্বাবুয়ের ভরসা হয়ে ক্রিজে ছিলেন চাকাভা। কিন্তু তাসকিনের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় ৯১ বলে ৮৪ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে। তবে এরপর রায়ান বার্ল ও সিকান্দার রাজা আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী শুরু করেন। দুজনেই তুলে নেন ফিফটি।  ৪৮ বলে ক্যারিয়ারের ১৭তম ওয়ানডে ফিফটির দেখা পান ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা রাজা। অন্যদিকে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় মাত্র ৩৮ বলে ফিফটি তুলে নেন বার্ল। রাজার সঙ্গে তার জুটিতে আসে ১১২ রান, মাত্র ৮০ বলে। মোস্তাফিজের বলে মোসাদ্দেক হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে রাজার ব্যাট থেকে আসে ৫৪ বলে ৫৭ রান।

বাংলাটিভি/ এস

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button