
অবশেষে বিক্রি হয়ে গেল ২৪ বছর আগে মেসির সই করা সেই ন্যাপকিন পেপার। দাম উঠলো সাত লক্ষ ৬২ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশ মুদ্রায় যার পরিমাণ ১১ কোটি ২৯ লাখ ৯৩ হাজার ২০১ টাকা।
২৪ বছর আগের কাহিনী। ডিসেম্বরের এক দুপুরে ১৩ বছর বয়সী রোজারিওর ছোট্ট ছেলে লিওনেল মেসির সঙ্গে চুক্তি হয় কাতালান ক্লাব বার্সেলেনার। ক্লাব ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরের খাবার খেতে বসে বার্সার ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাস, এজেন্ট হোরাসিও গ্যাগিওলি আর ট্যালেন্ট হান্ট স্কাউট হোসে মারিয়া মিঙ্গুয়েলার উপস্থিতিতে লিও’র সঙ্গে বার্সার চুক্তি হয় একটি ন্যাপকিন পেপারে। এরপরের গল্পটা লেখা ইতিহাসের পাতায়।
ওই বছরের সেপ্টেম্বরেই হয়েছিল মেসির ট্রায়াল। যেখানে মিঙ্গুয়েলাসহ সবার চোখ আটকে যায় নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ ক্লাবের অসাধারণ এক প্রতিভায়। মেসির তখন গ্রোথ হরমোনে সমস্যা। মাসে অন্তত হাজার ডলার প্রয়োজন চিকিৎসায়, না হলে থেকে যেতে হবে বামন হয়ে। মেসির সন্ধান পেয়েও শুধুমাত্র চিকিৎসা খরচের কথা চিন্তা করে পিছিয়ে যায় বুয়েন্স আয়ার্সের বিখ্যাত ক্লাব রিভারপ্লেট।
বার্সেলোনার প্রেসিডেন্ট তখন হুয়ান গাসপার্ত। তিনি ভেবেছিলেন, তাড়াহুড়া করে তার সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হবে। তবে এজেন্ট গ্যাগিওলি প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে জানালেন, দ্রুত চুক্তি না হলে অন্য ক্লাবে মেসিকে নিয়ে যাবেন, এমনকি হতে পারে তা রিয়াল মাদ্রিদও। এ কথা শুনে তখনই চারকোনা এক টুকরো ন্যাপকিন কাগজ হাতে তুলে নেন রেক্সিস। নীল কালিতে লিখেছিলেন বার্সার সাথে মেসির প্রথম চুক্তি।
চুক্তিতে লেখা ছিল “বার্সেলোনায় ১৪ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে মিঙ্গুয়েলা, হোরাসিও এবং বার্সার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি কার্লোস রেক্সাসের উপস্থিতিতে কিছু বিষয়ে অমত থাকা সত্ত্বেও একটি নির্দিষ্ট অঙ্কে খেলোয়াড় লিওনেল মেসিকে সই করানোর ব্যাপারে একমত হওয়া গেল।’
পৃথিবীর ইতিহাসে সম্ভবত সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ন্যাপকিন ওটাই। ওটার তাৎপর্যের তুলনায় দামটা বোধহয় কিছুই নয়, একটা অঙ্ক কেবল। যেভাবে বিন্দু বিন্দু জল থেকে সিন্ধু হয়েছে… মেসি নামের ফুটবল মহাসাগরের শুরুও তো হয়েছে এই সামান্য টুকরো থেকেই।
ক্রীড়া ডেস্ক। বাংলা টিভি