ক্রমেই বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে বিএনপি-জামায়াত
উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে বিএনপি-জামায়াত ক্রমেই বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে মন্ত্রী একথা বলেন।
দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের জন্য ‘হুমকি’ হওয়ায় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্র শিবির ও হেফাজতে ইসলামের মতো ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে একটি প্রস্তাব তোলা হয়েছে।
পাশাপাশি আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট থেকে জামায়াতে ইসলামের অনেককেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি আওয়ামী লীগ কিভাবে দেখছে জানতে চাওয়া হয় দলটির সাধারণ সম্পাদকের কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, জামায়াত এবং বিএনপি একই নীতি ও আদর্শে বিশ্বাসী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগে মনে করা হতো স্ট্র্যাটেজিক বিষয়ে তারা সঙ্গে আছে কিন্তু না, স্ট্র্যাটেজিক কোনও বিষয় না। তাদের সম্পর্কটা একেবারেই নীতি আদর্শের ব্যাপার। তাদের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য এবং কর্মকাণ্ড একই।
সারা বছরই তারা একসঙ্গে কাজ করে। বিএনপির সভা সমাবেশ ও জোটে আছে জামায়াত এবং এটা দৃশ্যমান। এখানে লুকোচুরির কিছু নেই। নিষিদ্ধ করার বিষয় আদালতের এখতিয়ারে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা আমাদের এখতিয়ার না, আদালতের বিষয়।’
‘আমার বিশ্বাস মিডিয়ার রিপোর্ট যেটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন, জামায়াতের ব্যাপারে তাদের যেই পর্যবেক্ষণ, আমার মনে হয় আদালতের গোচরেও গেছে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে , যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যে গণতন্ত্রের চর্চা আছে। তবে হাউস অব কমন্স, কংগ্রেসে তারা যেসব আলোচনা করেন, এখানে নানা বিষয় আসে।
সেখান থেকে একটা বিষয় নিয়ে স্বার্থের অনুকূলের অংশ নিয়ে ব্যবহার করে, এটা হয়তো আপাতদৃষ্টিতে সমস্যার কারণ। হয়তো টোটাল প্রতিবেদন একরকম। সেখান থেকে কোনও একটা অংশ নিয়ে, কেউ কেউ রাজনৈতিক স্বার্থে নির্বাচনের ওপর প্রভাব বিস্তারে, অনেকেই এসব করে থাকে।
নির্বাচন আসলে এগুলো বেশি হয়। তাই কি কি প্রতিবেদনে থাকলো এটা আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের পক্ষে বললেও আমরা সেটাকে এভাবে দেখবো না। কি কি প্রতিবেদনে আসলো সেটা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না।
আমরা চাই জনগণের সমর্থন। আমাদের কনফিডেন্স আছে, বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে। মানুষ আজকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। আমাদের বিশ্বাস সারাদেশে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগ বিজয় হবে’, যোগ করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
নির্বাচন নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষকে আশ্বস্ত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের নির্বাচন খুব সুন্দর হবে। অনুকূল পরিবেশে উতসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দিতে পারবেন।
এখানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ধরণের হস্তক্ষেপ হবে না। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন কতৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সব ধরণের সহায়তা সরবরাহ করবে। প্রয়োজন শেখ হাসিনার সরকার সব ধরণের সহায়তা করার প্রস্তুত আছে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, পাকিস্তানের সাথে বিএনপি জামায়াতের বন্ধুত্ব এখনো অটুট আছে। কাজেই বন্ধুহীন হয়ে পড়বে এই মুহুর্তে বলা ঠিক নয়। তবে উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে তারা ক্রমেই বন্ধুত্বহীন হয়ে পড়ছে।
নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে বলে বিএনপি যে অভিযোগ করছে তার জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ শুরুতেই তারা নষ্ট করেছে। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই।
সেই অবস্থা কাটিয়ে এখন সুন্দর একটা পরিবেশ বিরাজ করছে। বিদেশি যারা আসছেন তারা আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গেও কথা বলেছেন। পরিস্থিতি তারা অনুকূল পাচ্ছেন।
বিএনপি শঙ্কা করবে, এটা তাদের পুরানো অভ্যাস। পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গণনা পর্যন্ত তারা শঙ্কা প্রকাশ করেছে। এটা তাদের পুরানো অভ্যাস, এটা তারা করবেই। একটা ভাঙা রেকর্ড এটা তারা বাজাতেই থাকবে। এ নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা নেই কারণ আমরা জানি সুষ্ঠু, সুন্দর, স্বচ্ছ একটা নির্বাচন হবে।
পরিবেশ নষ্ট করে আমাদের লাভ কি? ক্ষতিটা তো আমাদেরই হবে। ভরা কলসি নড়ে না, খালি কলসি নড়াচড়া করে অভিযোগ নিয়ে।’
বিএনপির বিরুদ্ধে নির্বাচন বানচালের যেই অভিযোগ ছিল সেখান থেকে কি তারা পিছু হটেছে নাকি এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, ‘তারা এখনও বানচাল করা থেকে পিছু হটেনি। আমাদের আশংকা হচ্ছে তারা নাশকতার, সহিংসতার পথে যেতে পারে।’
‘জগাখিচুড়ি ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে এবার ভোট বিপ্লব হবে’, যোগ করেন তিনি।
বাংলাটিভি/এবি