এসডিজি বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা জাতিসংঘে তুলে ধরলেন পরিকল্পনামন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান।
স্থানীয় সময় বুধবার জাতিসংঘের চলতি উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ কান্ট্রি স্টেটমেন্ট-এ বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এসডিজি বাস্তবায়ন প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর হিসাব মতে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি। বৈশ্বিক নিম্নমুখী প্রবৃদ্ধি হার সত্বেও বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে ৭ ভাগের উপরে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। পরিকল্পনামন্ত্রী বাংলাদেশের রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ এর প্রত্যাশার কথাও এই ফোরামে তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন আমরা সামগ্রিকভাবে এবং সমাজের সকলকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি যাতে প্রতিটি নাগরিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারে এবং উন্নয়নের সুফল থেকে কেউ বাদ না যায়।
তিনি বলেন, আমাদের পরবর্তী উন্নয়ন পরিকল্পনায় ২০২৫ সালের মধ্যে দুই অঙ্ক বিশিষ্ট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং আয় বৈষম্য কমাতে সর্বোচ্চ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি বিনির্মাণে আমরা মানসম্মত শিক্ষার উপর জোর দিয়েছি। নারী শিক্ষাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছি যাতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে লিঙ্গসমতা অর্জিত হয়। সরকার নাগরিকদের উন্নত সামাজিক সুরক্ষা প্রদান করার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ স্যোসাল সিকিউরিটি কৌশল’বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের শিকার বিশ্বের অন্যতম একটি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজস্ব তহবিলের মাধ্যমে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’সহ যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা উল্লেখ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো বৈদেশিক রেমিটেন্স বাংলাদেশের অর্থনীতিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করছে এবং গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে মর্মে উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, তথ্য-প্রযুক্তির বিস্তার ও যুবকেন্দ্রিক উন্নয়ন ভাবনার কথাও তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান।
২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে এসডিজির পূর্ণ বাস্তবায়নে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন মর্মে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এক্ষত্রে উন্নয়ন অংশীদার ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থাসমূহকে আর্থিক, কারিগরি, সক্ষমতা বিনির্মাণ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে যাতে টেকসই অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকে। আর এজন্য প্রয়োজন শক্তিশালী বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব; যা সময়ের দাবি।
পরে পরিকল্পনামন্ত্রী ইকোসকের সভাপতি ও জাতিসংঘের আঞ্চলিক কমিশনসমূহ (ইকোনমিক কমিশন ফর আফ্রিকা, ইকোনমিক কমিশন ফর ল্যাটিন আমেরিকা অ্যান্ড ক্যারিবিও, ইকোনমিক অ্যান্ড স্যোসাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্যা প্যাসিফিক, ইকোনমিক অ্যান্ড স্যোসাল কমিশন ফর ওয়েস্ট আফ্রিকা, ইকোনমিক কমিশন ফর ইউরোপ) এর আয়োজনে ‘জাতীয় টেকসই উন্নয়ন বাস্তবতায় এজেন্ডা ২০৩০ এর বাস্তবায়ন: আঞ্চলিক প্রেক্ষিতসমূহ’ শীর্ষক এক উচ্চপর্যায়ের মধ্যাহ্ন ভোজ সভায় যোগ দেন।
বাংলাটিভি/শহীদ