সম্প্রতি ব্যাংকের বুথ থেকে একজন নারীর টাকা তোলার একটি দৃশ্য ভাইরাল হয়। পুলিশও এই নারীকে খুঁজছিল, কারণ কার্ডটি ছিল চুরিকৃত। যার প্রকৃত মালিক দুবাই প্রবাসী সাইফুল ইসলাম। পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থল বাংলাদেশ ছাড়াও ছিল দুবাই। ফলে পুরো তদন্তে নিতে হয়েছে প্রযুক্তির সহায়তা।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে টাকা তোলার ওই দৃশ্য ভাইরাল হওয়ার পর গ্রেপ্তার এড়াতে তানিয়া নামের ওই নারীর চেষ্টার কমতি ছিল না। চেষ্টা করেন নিজেকে আড়াল করতে। আট হাজার টাকায় পরিবর্তন করেছিলেন তার নিজের চেহারাটি। তার পরেও শেষ রক্ষা হয়নি চক্রটির। ধরা পড় গোয়েন্দার জালে।
জানা যায়, দুবাই থেকে একটি ডেবিট কার্ড চুরির পর দেশে পাঠানো হয় কুরিয়ারে। গোপন পিন নম্বর পাঠানো হয় হোয়াটসঅ্যাপে। সেই কার্ড দিয়ে টাকা তুলে আবার পাঠানো হয় দুবাইতে। কার্ড হাতে পেয়ে বিভিন্ন বুথ থেকে তোলা হয় ১৩ লাখ টাকা। কিন্তু টাকা তুলতে গিয়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধরা পড়েন এক নারী।
আটকের পর ওই নারী (তানিয়া) জানায়, টাকা- দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আবার দুবাইয়ে স্বামী রাজুর কাছে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টাকা তোলার এই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়লে, বিষয়টি নজরে আসে দুবাই প্রবাসী স্বামী রাজুর। যিনি তাৎক্ষণিক দেখা করেন কার্ডের মালিকের সঙ্গে।
ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম জানায়, এই নিউজ প্রচারের পর রাজু আমাকে বার বার ফোন দেয়। ২৩ তারিখে আমাকে একটি নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে যায় এবং বলেন, এই ভিডিওতে যাকে দেখা যাচ্ছে সে আমার বউ। সে আরও জানায়, ‘মামুন নামের অপর এক বাংলাদেশি কার্ড টা আমাকে দিয়ে বলে…রাজু…আমার একটা কার্ড আছে বাংলাদেশে, ৪/৫ লাখ টাকা আছে। এই টাকা আমি ব্যবসার কাজে দুবাই আনবো। তুই আমাকে সহযোগীতা কর। তবে কেউ যেন না জানে।’
এরমধ্যে, ধরা পড়েন সাইফুলের গাড়ি চালক মামুন। তার দেয়া তথ্যে গ্রেপ্তার হন সেই নারী। সাইফুলের কার্ডটি চুরি করেন তারই গাড়িচালক মামুন। চুরির পর তা দেন দুবাইয়ে আরেক বাংলাদেশি বন্ধু রাজুকে। রাজু কার্ডটি কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠান বাংলাদেশে- স্ত্রী তানিয়ার কাছে। কার্ডের গোপন নম্বর আসে হোয়াটসঅ্যাপে।
ডিবি’র সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-কমিশনার মীর মোদদাছছের হোসেন বলেন, “তারিখ অনুযায়ী কোন কোন তারিখে টাকা উত্তোলন হয়েছে, তার (টাকা উত্তোলনকারী) মোবাইল ফোন ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তি যা ব্যবহার করা হয়েছে এগুলোর মাধ্যমে আমরা জানতে পারি তার সঙ্গে কারা কথা বলেছিলো। সেই ক্লু ধরে আমরা প্রথমে গ্রেপ্তার করি মানুন কে।” তদন্তে বড় সহায়ক ছিল সিসিটিভির ফুটেজটি।