
রাজধানীতে বসবাসকারিদের বেশিরভাগেরই মাসের উপার্জনের সিংহভাগই চলে যায় বাসা ভাড়া দিতে। বাড়ি মালিকরা নানা অযুহাতে বিভিন্ন সময়ে ভাড়া বৃদ্ধি করে নিজেদের হিসেবটা পুষিয়ে নিলেও, ভাড়াটিয়াদের নাভিশ্বাস যেন অন্তহীন।
বাসাভাড়া নিয়ে নীতিমালার হালনাগাদ বাস্তবায়ন হয়নি কয়েক দশকেও। আয় সার্বিক বিবেচনায় নগরীর বাসাভাড়া সমন্বয়ে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন ভাড়াটিয়া সমিতি।
বেসরকারি একটি কোম্পানিতে ৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন মীর আবিদ। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন ঢাকার সেন্টাল রোডের একটি ভাড়া বাসায়। প্রতিমাসে ভাড়া বাবদ তাকে গুনতে হয় প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার টাকা। যার মধ্যে শুধু বাড়ি ভাড়াই ১৫ হাজার। বাকিটা গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ বিল। কেবল থাকার খরচ দিয়েছে আয়ের অধিকাংশ শেষ।
হাতের বাকি টাকা সারামাসের সাংসারিক প্রয়োজন মেটাতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়, তার মতো রাজধানীর অধিকাংশ কর্মজীবীদেরকেই।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক সংগঠন ক্যাবের সমীক্ষা থেকে জানা যায়, গত ২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে অন্তত ৪ গুণ। অন্য একটি জরিপ থেকে জানা যায়, নগরীর ২৭ ভাগ ভাড়াটিয়া তাদের আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ, ৫৭ ভাগ প্রায় অর্ধেক এবং ১২ ভাগ ভাড়াটিয়া ৭৫ শতাংশ টাকা ব্যয় করেন বাড়িভাড়া দিতেই।
দেশের অর্থনীতির সিংহভাগ রাজধানীকেন্দ্রিক হওয়ায়, প্রতিনিয়তই ঢাকামুখী কর্মসংস্থানে ঝুঁকছে মানুষ। থাকার জন্য ভাড়াবাসার উপর নির্ভরশীলতাও বেড়েছে। এ কারণে, চাহিদা থাকায় বাড়িওয়ালারাও ভাড়া বাড়াতে পারেন মনমতো। কোথাও যেন জবাবদিহিতা নেই বলে জানালেন, ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি বাহরানে সুলতান বাহার।
১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, কোনো বাড়ির মানসম্মত ভাড়ার অধিক অর্থ কোনোভাবেই আদায়যোগ্য হবে না। কিন্তু রাজধানীতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিড়াম্বনা নিত্য-নৈমত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাসাভাড়া সমন্বয়ে সরকারি কর্তৃপক্ষের নজরদারি নিশ্চিত করা এবং ভাড়াটিয়ারা যাতে সহজেই আইনি সুবিধা নিতে পারেন, তেমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করেন অধিকাংশ নগরবাসী।
বুলবুল আহমেদ, বাংলা টিভি