
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আছে বিশ্বমানের ভাষা জাদুঘর এবং ভাষা আর্কাইভ। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ভাষার বর্ণলিপি, উৎপত্তি ও ইতিহাস সংরক্ষিত আছে সেখানে। অথচ প্রচারের অভাবে দর্শনার্থীদের তেমন আনাগোনা নেই ওই জাদুঘরে।
ভাষাবিজ্ঞানীরা বলছেন, এর কার্যক্রম প্রসারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের সম্পৃক্ত করতে উদ্যোগ নিতে হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটকে।
পৃথিবীর সব মাতৃভাষা সংরক্ষণ, বিকাশ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০১১ সাল থেকে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। তবে গত ১০ বছরেও কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে রয়েছে একটি লিখন-বিধি’র আর্কাইভ; যেখানে রয়েছে ১৫৩টি ভাষার বর্ণমালা। এসব লিপি থেকে বাংলা ভাষাসহ বিভিন্ন ভাষার লিখন পদ্ধতির নানা পরিবর্তন এবং এগুলো থেকে ভিন্ন ভিন্ন লিখন পদ্ধতি সৃষ্টি হওয়ার বাস্তবচিত্র দেখতে পাওয়া যায়। এখানে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার হস্তলিখন চিত্র।
এ ছাড়াও রয়েছে ভাষা জাদুঘর- যেখানে এশিয়া মহাদেশের ভাষাগ্যালারি, অস্ট্রেলিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভিন্ন দেশের ভাষিক নিদর্শনগুলো সংরক্ষিত আছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রভাষা, প্রচলিত বিভিন্ন ভাষা ও সেসব ভাষার নমুনা নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সেখানে। অথচ স্বাভাবিক অবস্থায় এ জাদুঘরে প্রতি মাসে দর্শনার্থী আসে গড়ে মাত্র ১০ জন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও ভাষাবিজ্ঞানী শিশির ভট্টাচার্য মনে করেন, শিক্ষার্থীদের এখানে আনার জন্য ইনস্টিটিউটকে আরও উদ্যেগী হতে হবে। পাশাপাশি, বাড়াতে হবে প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতাও।
তবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক জিনাত ইমতিয়াজ আলী বলেন, অন্যান্য অনেক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় জাদুঘরটি এখনও নতুন। কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের জাদুঘর শুক্র ও শনিবার ছাড়া সপ্তাহে ৫দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। কোনো প্রকার টিকিট ছাড়াই যে কেউ প্রবেশ করতে পারেন সেখানে।
আসাদ রিয়েল, বাংলা টিভি