৭৫’এ শেখ হাসিনা : অদম্য এক নেতা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ফেলে আসা জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে দেশের সবচে প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে দিশেহারা ও বহুধাবিভক্ত দলের হাল ধরেন তিনি। মৃত্যুশঙ্কা পায়ে ঠেলে, বহু ঝড়ঝাপটা সামলে দৃঢ় সংকল্প-সংগ্রামে বারবার নৌকাকে সফলতার তীরে ভিড়িয়েছেন এই কাণ্ডারি। শুধু দল নয়, রাষ্ট্র পরিচালনায়ও দেখিয়েছেন বহু চমকপ্রদ সাফল্য। যার হাত ধরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মর্যাদাসীন অবস্থান পেয়েছে। গণতন্ত্রের মানসকন্যা এই সফল রাষ্ট্রনায়কের জন্মদিনে, বাংলা টিভি পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। আরো জানাচ্ছেন আসাদ রিয়েল।
১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন তিনি। তরুণ বয়স থেকেই অধিকার আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রাম ছিলেন সক্রিয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, সেসময় পড়াশোনার জন্য জার্মানিতে অবস্থান করায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানা। দীর্ঘ ছয় বছর নির্বাসিত থাকার পর ১৯৮১ সালে জীবনবাজি রেখে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। হাল ধরেন বাবার হাতে গড়া আওয়ামী লীগের। দীর্ঘ সংগ্রাম আর আন্দোলনে মাধ্যমে ২১ বছর পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ফেরে রাষ্ট্র ক্ষামতায়।
২০০১ সালের পর ক্ষমতার বাইরে থাকলেও, দৃঢ় নেতৃত্বে দলকে আরো সুসংগঠিত করে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে গণমানুষের দলে পরিণত করেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে শত প্রতিকূলতা আর জীবন বিনাশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে চলতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। যার মধ্যে সবচে ভয়াবহ ছিল ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জনসভায় তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপশক্তির গ্রেনেড হামলা। সে যাত্রায় খুব অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
২০০৭ সালের ১/১১ এর পর, মাইনাস টু-ফর্মুলায় শেখ হাসিনাকে দল থেকে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। সে সময় প্রথমবারের মতো কারাবরণও করতে হয় তাকে। কিন্তু দলের প্রতি একনিষ্ঠতা এবং তৃণমূলের নিরঙ্কুশ সমর্থন থাকায়, শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার হাতেই থেকে যায় দলের দায়িত্ব।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এলে শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। এরপর নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যদিয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংবিধান রক্ষার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। আর শেখ হাসিনা হন তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক চতুর্থবার এবং টানা তৃতীয়বাবের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
সরকারপ্রধান হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য বেশকিছু আন্তর্জাতিক সন্মাননায় ভূষিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বস এ, বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় ২৬তম স্থানে উঠে আসে তার নাম।
বয়সের ফ্রেমে ২৮ সেপ্টেম্বর ৭৫-এ পা রাখলেন বঙ্গবন্ধু তনয়া, বাংলাদেশের সবচে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তার পরিণত বয়সে এক পরিণত বাংলাদেশের রূপও যেন দেখছে দেশের মানুষ।
বাংলাটিভি/ আসাদ রিয়েল