গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো দুরুত্ব থাকবে না: ডিজাবের সঙ্গে মতবিনিময়ে সেনাপ্রধান
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছিলাম- জনগণের সঙ্গে কোনো দুরুত্ব থাকবে না। গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো দুরুত্ব থাকবে না। এটা আমি উপলব্ধি করি। আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গেই কাজ করবো। পাশাপাশি গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনা সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণেরও অংশ।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণ (এক্সারসাইজ নবদিগন্ত) কার্যক্রম চলাকালে ‘ডিফেন্স জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিজাব)’ নির্বাহী কমিটি ও সদস্যদের উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী প্রধান এ কথা বলেন।
সাভারের মিলিটারী ফার্মে মাটির নিচে বিশেষভাবে স্থাপিত সেনাসদরের ফিল্ড কমান্ড পোস্টের মিডিয়া সেন্টারে আনুষ্ঠানিক ওই ব্রিফিং ও মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেন সেনাবাহিনী সদর দফতরের সামরিক গোয়েন্দা পরিদফতরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন-উর-রশিদ। এসময় বক্তব্য রাখেন ডিজাব সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, কার্যনিবাহী সদস্য মাসুদ করিম প্রমুখ। গত ১৯ ডিসেম্বর শুরু হওয়া ওই অনুশীলন আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হয়েছে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি)।
সেনাবাহিনী প্রধান প্রতিরক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসময় আরও বলেন, গণমাধ্যমের সঙ্গে আমাদের তথা সেনাবাহিনীর দূরুত্ব থাকবে না। কিন্তু যখনই দেখা যায় যে, আপনারা এমন কিছু লিখছেন বা আপনাদের অজান্তে হয়ে যাচ্ছে, যা নিয়ে আমরা বিব্রত হচ্ছি কিংবা এটা নিয়ে টানাপড়েন সৃষ্টি হচ্ছে তখনই দুরুত্বটা সৃষ্টি হয়। আমরা একে অপরের সহায় হবো, সহযোগী হবো।
সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণে গণমাধ্যমকর্মীদের সম্পৃক্ত করার প্রসঙ্গ আনলে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা কিন্তু প্রশিক্ষণ নিচ্ছি যুদ্ধের। আর যুদ্ধের সময় অবশ্যই গণমাধ্যম আমাদের সঙ্গে থাকবে। যেভাবে থাকবে ওই আঙ্গিকেই আমরা আপনাদের তথা গণমাধ্যমকে সঙ্গে নিয়ে যাবো। আগামিতে যখনই এ ধরণের প্রশিক্ষণ হবে সেখানে গণমাধ্যম থাকবে। এটা আমাদের প্রশিক্ষণের অংশ। ভবিষ্যতে করোনার ভয়াবহতা না থাকলে এর ব্যপ্তি আরও বড় হবে। তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় যেভাবে মিডিয়া সেল কাজ করবে, সেভাবে সেনা সদরদফতরের মিডিয়া সেল তৈরি করা হয়েছে। এভাবেই সেনা বাহিনী গণমাধ্যমের সঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরকারের নির্দেশে যে কোনো দায়িত্ব পালনে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে বলেও এসময় মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
ডিফেন্স জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাংবাদিকদের স্বাগত জানিয়ে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে সেনাসদরের সামরিক গোয়েন্দা পরিদফতরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন-উর-রশিদ বলেন, ‘কঠিন প্রশিক্ষণ, সহজ যুদ্ধ’ এ মুলমন্ত্রকে সামনে রেখে আমরা প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছি। সেনাবাহিনীর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এবছর সেনাবাহিনী সদর দফতরের কমান্ড গ্রুপ ও সাপোর্ট গ্রুপ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত উৎকর্ষতা বেড়েছে। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আমরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ সরকার ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করেছে। সেই আলোকে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে। সেই আলোকে আমরা এই প্রশিক্ষণ করেছি। বিশ্বমানের সেনাবাহিনী গড়ে তোলায় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
সেনাসদরের কমান্ড গ্রুপের মিডিয়া সেলে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম, চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ, ডিজাবের সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, ডিজাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, অর্থ সম্পাদক আয়নাল হোসেনসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও ডিজাবের বেশ কয়েকজন সদস্য।
বাংলাটিভি/ রাপ্পি