fbpx
আন্তর্জাতিকবাংলাদেশ

‘কুদস ও ফিলিস্তিনের মুক্তি: অব্যাহত প্রতিরোধের অনিবার্যতা’ সভা অনুষ্ঠিত

আন্তর্জাতিক আল-কুদ্স দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানী ঢাকায় ‘কুদস ও ফিলিস্তিনের মুক্তি: অব্যাহত প্রতিরোধের অনিবার্যতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে আল-কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মুজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাকিব মুহাম্মাদ নাসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশস্থ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।

এতে আলোচক ছিলেন, ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সিলর সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহম্মদী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা এবং  ইসলামি স্কলার ড. এ কে এম আনোয়ারুল কবীর।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, সিনিয়র সাংবাদিক ও চেঞ্জটিভি.প্রেসের প্রতিষ্ঠাতা আমীরুল মুমিনীন মানিক। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, আল-কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক মুস্তফা তারিকুল হাসান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও আল-কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহ্ কাউছার মুস্তাফা আবুলউলায়ী।

WhatsApp Image 2025 03 21 at 7.43.05 PM

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিন জুড়ে পবিত্র রমজানের মধ্যেই যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে পশুশক্তি ইসরায়েল আবারও শুরু করেছে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম গণহত্যা। প্রথম কিবলা বায়তুল মুকাদ্দাস এর পবিত্র ভূমিতে এ অন্যায় ও হত্যাযজ্ঞ চলছে। বায়তুল মুকাদ্দাস পৃথিবীর সমস্ত শৌর্য বীর্যের ইতিহাস যেখানে স্থির হয়ে আছে। বায়তুল মুকাদ্দাস ও তার আশপাশের এলাকা তথা সমগ্র ফিলিস্তিন ভূখণ্ড বহু নবী-রাসূলের স্মৃতিবিজড়িত এবং কোরআন মজিদে এ পুরো ভূখণ্ডকে ‘পবিত্র ভূমি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই মসজিদুল আকসা, বায়তুল মুকাদ্দাস ও ফিলিস্তিনের প্রতি ভালোবাসা প্রতিটি মুমিনের হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত।

১০৯৬ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপের ক্রুসেডার খ্রিস্টানরা সমগ্র সিরিয়া ও ফিলিস্তিন দখল করে নেয়ার পর বায়তুল মুকাদ্দাসের বিভিন্ন ইসলামী স্থাপনায় পরিবর্তন আনে। এরপর ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে সালাহ উদ্দীন আইয়ুবি বায়তুল মুকাদ্দাস শহরকে আবারও মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসেন। তবে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতায় ফিলিস্তিনে অবৈধ ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সেখানকার মুসলমানদের ওপর বিপদ নামতে শুরু করে।

বিংশ শতাব্দীর ৪০ এর দশকে ইহুদিবাদী ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনের ভূমি ও পবিত্র কুদস দখলের পর একটি কঠিন সময়কাল অতিবাহিত হয়েছে এবং সেখানকার রাজনৈতিক জীবনে অনেক উত্থান পতন হয়েছে। কিন্তু ১৯৭৯ সালে  ইরানে ইসলামি বিপ্লবের বিজয় ফিলিস্তিন ইস্যুর পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় একটি টার্নিং পয়েন্ট হয়ে ওঠে এবং ইরানের বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেইনী দখলদার ইহুদীবাদী সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের পতাকা উড্ডীন করেন এবং কুদস শরীফ ও ফিলিস্তিনের ইসলামি ও পবিত্র ভূমির মুক্তির বিস্মৃত লক্ষ্য ও আদর্শকে পুনরুজ্জীবিত করেন। ইমাম খোমেইনীর পক্ষ থেকে রমজান মাসের শেষ দশকের শুক্রবারকে আল কুদস দিবস নামকরণ ছিলো একটি বৃহৎ বুদ্ধিবৃক্তিক ও গঠনমূলক রাজনৈতিক উদ্যোগ যা ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক মুক্তি সংগ্রামের পথকে পাল্টে দেয় এবং এই পথটিকে আলোকিত ও মসৃণ করে তোলে। সেই পথ ধরে আল কুদস কমিটি বাংলাদেশও সোচ্চার হচ্ছে সম্মিলিত প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাতে।

বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিনের সংকট কেবল ফিলিস্তিনের জনগণের সংকট নয়, এটা গোটা ইসলামী বিশ্বের সংকট।তাই বিশ্বের সকল মুসলমানকে এই সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, মুজলুমের বিরুদ্ধে জালেমের অত্যচার চিরকাল থাকতে পারে না। শত প্রতিকূলতা সত্বেও অবৈধ দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যোদ্ধারা যেভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে তাতে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি একদিন স্বাধীন হবেই।

এসআর

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button