হকারমুক্ত ভূতের গলি

রাজধানীর প্রায় সব অলিগলি এখন হকারদের দখলে। অনেক গলিতে পা ফেলার জায়গাটুকুও নেই তাদের দাপটে। সবজি, মাছ, ফল ও নানা নিত্যপন্যের ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের জন্য বেশির ভাগ সময় লেগে থাকে দীর্ঘ যানজট। কখনো কখনো সেই যানজট দুর্বিষহ হয়ে উঠে পথচারিসহ স্থানীয়দের কাছে। তবে একেবারে ভিন্নচিত্র দেখা গেছে রাজধানীর ধানমণ্ডির ভূতের গলিতে। গ্রিনরোড থেকে হাতিরপুল পর্যন্ত পুরো রাস্তায় দেখা নেই কোন হকারের। কিন্তু ক’দিন আগেও এই গলি ছিল হকারদের দখলে।
সমস্যা তীব্র হওয়ায় হকারমুক্ত গলি করার কাজে প্রথমে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা মো: ফয়জুর রহমান রিপন। তার এই মহৎ কাজের সাথে যুক্ত হয় আরও কয়েকজন সচেতন মানুষ। তাদের সহযোগিতায় ভূতের গলি জামে মসজিদের সামনের (খাস জমি) খালি জায়গায় গলির সব হকারদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন তিনি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে নিয়ে সেই খালি জায়গায় গলিতে ব্যবসা করা প্রায় ৫০ জন হকারকে পুনর্বাসন করা হয়। এতে করেই পাল্টে যায় পুরো এলাকার চিত্র। যে গলি পার হবে আগে সময় লাগতো ১৫ থেকে ২০ মিনিট এখন সেই একি রাস্তা পার হতে সময় লাগে মাত্র ২ থেকে ৩ মিনিট। আর এক জায়গা থেকে মাছ মাংস সবজি ফল কিনতে পেরে খুশি এখানকার বাসিন্দারা। এছাড়া নির্ধারিত জায়গায় থেকে ব্যবসা করতে পেরে খুশি হকাররাও।
এই মহৎ কাজের তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন কথা হয় সেই রিপনের সাথে। তিনি জানান, শর্তসাপেক্ষে আপাতত মাছ তরকারির ভ্যান গাড়ি গুলোকে স্থানান্তর করার জন্য এই উদ্যোগ। এখানে ৫০ টির মতো দোকান রয়েছে। প্রতিদিন সার্ভিস চার্জ অর্থাৎ বিদ্যুৎ, পানি, দারোয়ান, নাইট গার্ড,ময়লা পরিষ্কার সহ অন্যান্য সুবিধা বহনের জন্য ৭০ টাকা করে নেওয়া হয়। কোন প্রকার বাড়তি টাকা নেওয়া হয় না। এই ৭০ টাকার মধ্যে যদি সার্ভিস চার্জ হয়ে যায় বাকি টাকা তাদের ফেরত দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমানের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় রাস্তার প্রায় ৪০ শতাংশ জায়গা দখল করে রাখতো হকাররা। তবে এখন সেই পরিবেশ আর নেই। সব হকার এক জায়গায় থাকায় পণ্য কেনাকাটা সহজ হয়েছে। আর পুরো রাস্তায় যানবাহন চলাচল হয়েছে নিরবিচ্ছিন।
যানজটের এই শহরে এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিঃসন্দেহে উধাহরন হতে পারে রাজধানীর অনন্যাও গলিতেও। তাহলে একদিকে যেমন কমবে যানজটের ভোগান্তি তেমনি হকারদের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হবে আরও নিরাপদ।
বাংলা টিভি ডেস্ক



