নান্দনিক স্থাপনা মক্কা রয়েল ক্লক টাওয়ার
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচিত ও নান্দনিক স্থাপনা মক্কা রয়েল ক্লক টাওয়ার। পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্রস্থান মক্কা নগরীর কাবা শরীফের দক্ষিণ প্রবেশপথ সংলগ্ন এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে। এই রয়েল ক্লক টাওয়ার, যার আরবি নাম আবরাজ আল- বাইত। শৈলী, সৌন্দর্য ও আভিজাত্যে, পৃথিবীর অন্যতম আকর্ষণীয় স্থাপনা এই মক্কা ক্লক টাওয়ার।
১৩০ ফুট আয়তনের রাজকীয় ঘড়ি, এই রয়েল ক্লক টাওয়ার। ১৭ কিলোমিটার দূর থেকে সময় গণনা করা যায় এই ঘড়ির। সুইস ও জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের ২৫০ জন বিশেষজ্ঞের তত্বাবধানে, ৩৬ হাজার টনের এই ঘড়িটি স্থাপন করতে সময় লেগেছে ৮ বছর।
ঘড়ির ওপরের অংশের ওজন ১২ হাজার টন। মাটি থেকে ৬০১ মিটার উচ্চতায় স্থাপন করায়, রাতে ৩০ মিলিমিটার দূর থেকে দেখা যায় এই ঘড়িটি। চন্দ্র পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র, জাদুঘর এবং হজ ও ওমরাহ পালনকারী পুণ্যার্থীদের জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত তিন হাজার কক্ষ রয়েছে এই টাওয়ারে।
২০০৪ সালে এই টাওয়ারের নির্মাণকাজ শুরু হয়ে, শেষ হয় ২০১১ সালে। ২০১২ সালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় এই রয়াল ক্লক টাওয়ারের। ৮০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই টাওয়ারে ১০ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে সক্ষম।
এই টাওয়ারের প্রবেশ মূল্য ১৫০ সৌদি রিয়াল। টাওয়ারের ভেতরে ১৫০ সৌদি রিয়াল দিয়ে টিকেট কেটে প্রবেশ করলে ঘড়ির সকল যন্ত্রপাতিসহ, সকল তথ্য জানা যায়। ঘড়ির মিনিটের কাটার দৈর্ঘ্য ২৩ মিটার ও ঘন্টার কাটার দৈর্ঘ্য ১৭ মিটার।
ঘড়িটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, যারা কানে কম শোনেন এবং কথা বলতে পারেননা তারা যেন দূর থেকে ঘড়ির কাটা দেখে নামাজের সময় বুঝতে পারেন। আর সেজন্য দিনে সাদা কালো আর রাতে সাদা সবুজ রং ধারণ করে এই ঘড়ি। এটি দেখতে গিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
ঘড়িটির ওপরে রয়েছে ৯৩ মিটার দীর্ঘ অগ্রচূড়া এবং স্বর্ণালি মোজাইক ও ফাইবার গ্লাসের তৈরি ৩৫ টন ওজনের নতুন চাঁদ। টাওয়ারের নিচ থেকে ওপরে বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বহু লাউড স্পিকার স্থাপন করা হয়েছে, যা সাত কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আজান ও নামাজের ধ্বনি প্রচার করতে পারে।
গোলাম কিবরিয়া, সৌদি আরব প্রতিনিধি