শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: সাতক্ষীরায় এমপিসহ ৫০ জনের জেল

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলায় হত্যা চেষ্টা ঘটনার মামলায় বিএনপির সাবেক সাংসদসহ ৩ জনকে ১০ বছরের জেল ও ৪৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে আদালত।
সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম হুমায়ুন কবির বৃহস্পতিবার সকালে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা ৩৪ জন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি ১৬ জনকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলে। দণ্ডিতরা সবাই বিএনপি নেতাকর্মী।
২০০২ সালে এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ‘ধর্ষণের শিকার’ হলে ওই বছর ৩০ অগাস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে তাকে দেখে মাগুরায় যাওয়ার পথে তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে।
সে সময় হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা করা হয়। কিন্তু এক আসামি হাই কোর্টে গিয়ে মামলা বাতিলের আবেদন করলে আদালতে স্থগিতাদেশ দেয়। তাতে মামলার কার্যক্রম ঝুলে থাকে দীর্ঘদিন।
হাই কোর্ট গতবছর অক্টোবরে তিন মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিলে নভেম্বরে ফের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ২৭ জানুয়ারি রায়ের জন্য ৪ ফেব্রুয়ারি দিন রাখেন বিচারক।
এ রায় ঘিরে সকাল থেকেই আদালত এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ অগাস্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার সময় কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়ি বহরে হামলা হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয়।
ওই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
তখন সাতক্ষীরার আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেয়।
ওই মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয়।
তদন্ত করে পুলিশ বিএনপির সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।
হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনের পৃথক ধারায় দেওয়া তিনটি অভিযোগপত্রের মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় হল। বাকি দুটি মামলা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
বাংলাটিভি/শহীদ