ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ডেঙ্গুর প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস সম্ভব: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘জনপ্রতিনিধিরা যে পর্যায়েই কাজ করুন না কেন জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার্থে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। করোনাকালীন সময়ে করোনাকে যেরকম সবাই গুরুত্ব দিয়েছিল এবং ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করেছিল তাতে করোনার যুদ্ধে আমরা সফল হয়েছিলাম। জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ডেঙ্গুর মতো রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধেও আমাদেরকে সেরকম সতর্ক ও সচেতন হতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা সম্পর্কিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। মতবিনিময় সভার আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগরভবনের সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে নগরবাসীদের সচেতন করতে এক র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। র্যালিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা অংশ নেন।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ সময় বিভিন্ন দেশের সমসাময়িক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ‘বর্তমানে ১২৯টি দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে সারা পৃথিবীতেই এই ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। তবে আসার কথা হল ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ হ্রাস করা সম্ভব। সেজন্য প্রধান কাজ হচ্ছে এডিস মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করা।’
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের নিজ নিজ এলাকার জনগণকে সাথে নিয়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করতে পারেন।’ এ সময় মন্ত্রী এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বা লার্ভা জন্মানোর মতো উপযুক্ত পরিবেশ আছে এ রকম বাসা বাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিস আদালতকে বড় অংকের জরিমানার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘নানাভাবে সতর্ক করার পরও মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলার মতো অসচেতনতাকে ক্ষমা করার সুযোগ নেই।’ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে মতামত উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস না করে ডেঙ্গুর সংক্রমণ হ্রাস করার সহজ কোনো উপায় নেই, কারণ মশা এমন একটি কীট যা যে কাউকেই কামড়াতে পারে।’
এ সময় তিনি এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংসে বিটিআই প্যাকেটের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং তা সাংবাদিকদেরকে দেখান। বক্তব্য শেষে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংসে বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং এ সম্পর্কিত নানা প্রশ্নের জবাব দেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কল সেন্টারের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু সচেতনতা তৈরিতে কাউন্সিলররা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন।’
এছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডে মসজিদের ইমাম ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সংযুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান মেয়র।
সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা। এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা একেএম শফিকুর রহমান ঢাকা উত্তরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উপর সচিত্র পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন।