fbpx
বিশ্ব বানিজ্যএশিয়া

১৫ জুলাই থেকে ঢাকা-বেইজিং ফ্লাইট চালু করছে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ভ্রমণের ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৫ জুলাই থেকে ঢাকা-বেইজিং সরাসরি ফ্লাইট চালু করছে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বেইজিংয়ের ডাশিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রুটে সপ্তাহে দু’টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানটি। প্রাথমিকভাবে প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও শনিবারে ঢাকা থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট। এর ফলে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে যোগাযোগ আরও সমৃদ্ধ হবে। যা দেশ  দু’টির মানুষের মধ্যে সংযোগ ও বন্ধুত্ব মজবুতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১ জুলাই) রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-বেইজিং রুটে ফ্লাইট পরিচালনার ঘোষণা দেয় চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান। অনুষ্ঠানে আরও  উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সিলেন্সি জনাব ইয়াও ওয়েন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, চীন বাংলাদেশের পরিক্ষিত বন্ধু। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী হয়ে কাজ করছে চীন। পদ্মা সেতু নির্মাণে চীনের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যাংক থেকে শুরু করে সকলেই যখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ’নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ’র স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছিল চীন। তিনি আরও বলেন, সংযোগের মাধ্যমেই উন্নয়ন আসে। এবং আমরা সংযোগ স্থাপনে বিশ্বাস করি। চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আরও চীনা বিনিয়োগ আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, “চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের সরাসরি ফ্লাইট ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে। যেহেতু চীনে প্রচুর পর্যটক রয়েছে, আমরা ভবিষ্যতে কক্সবাজার এবং কুনমিং বিমানবন্দরের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়টি পর্যালোচনা করছি।’

মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে মিয়ানমার, ভারত, চীন, নেপাল ও ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে চায় বাংলাদেশ ।

চীনা রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সিলেন্সি ইয়াও ওয়েন তার বক্তব্যে ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট উদ্বোধনের জন্য চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সকে অভিনন্দন জানান। এই রুটটি বৃহত্তর সহযোগিতা, জনগণের মধ্যে সংযোগ এবং উভয় পক্ষের জন্য সমান লাভ বয়ে আনবে এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সুযোগ আরও প্রসারিত করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ঢাকা-বেইজিং সরাসরি ফ্লাইট চীন ও বাংলাদেশের জনগণকে ভ্রমণ ও সুযোগ গ্রহণে উৎসাহিত করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, সংযোগই সবকিছু, সংযোগ ছাড়া কিছুই করা যায় না। এসময় ঢাকা-বেইজিং রুট উদ্বোধন করায় চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সকে ধন্যবাদ জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।

চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স জিএসএ, অ্যামনেস্টার সলিউশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআই পরিচালক হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, এই নতুন রুটটি দুই দেশের মানুষ, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতির সাথে সংযোগ বৃদ্ধিতে আমাদের ক্রমাগত প্রচেষ্টার একটি প্রমাণ। এই সংযোগ বাণিজ্য, পর্যটন, শিক্ষা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য নতুন দ্বার উন্মোচন করার পাশাপাশি দুই দেশকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের মহাব্যবস্থাপক জি কাংজিয়া বলেন, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইনস এভিয়েশন শিল্পে একটি শীর্ষস্থানীয় নাম, যা তার বিস্তৃত নেটওয়ার্ক এবং শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিশ্রুতির জন্য পরিচিত। এশিয়ার বৃহত্তম এয়ারলাইন হিসাবে, আমরা গর্বের সাথে প্রতিদিন ৩ হাজার টিরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করছি, যা যাত্রীদের বিশ্বজুড়ে ২০০ টিরও বেশি গন্তব্যে সংযুক্ত করছে। গত বছর আমরা ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে চীনে গেছি। এই বছরের প্রথমার্ধে সংখ্যাটি ইতিমধ্যে ৪০,০০০এর কাছাকাছি। অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা উপভোগ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরেন এবং চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মফিদুর রহমান (পিএসসি), বাংলাদেশ ব্যাংক, এসসিবি এবং নেতৃস্থানীয় ট্রাভেল এজেন্সির প্রতিনিধিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, অত্যাধুনিক এয়ারবাস A321 নিও এয়ারক্রাফ্ট দ্বারা পরিচালিত নতুন রুটটি বেইজিং এবং ঢাকার মধ্যে ভ্রমণকারী যাত্রীদের জন্য বর্ধিত ভ্রমণ বিকল্প এবং সুবিধা প্রদান করবে। এয়ারক্রাফ্টটিতে ১২টি বিজনেস ক্লাস, ১৮৭টি ইকোনমি ক্লাসসহ মোট ১৯৯টি আসনের ব্যবস্থা রয়েছে।

এসআর

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button