অন্তর্বর্তী সরকার যেন নিজেরা নিজেদের ব্যর্থতার কারণ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মি. রহমান বলেন, “এই অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। দেশে এবং বিদেশ থেকে নানা উসকানিতেও জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ হতে দেবে না। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাতে নিজেরাই নিজেদের ব্যর্থতার কারণ না হয়ে দাঁড়ায় সে ব্যাপারে তাদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে”।
দেশে-বিদেশে গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে জনগণের সরকার উল্লেখ করে মি. রহমান বলেন, “তাই জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন রেখেছে ও রাখবে। তবে কোন এক পর্যায়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাবদিহিতাও কিন্তু নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়”।
নির্বাচিত সংসদ এবং সরকার প্রতিষ্ঠাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান টার্গেট হওয়া জরুরি বলে মনে করেন মি. রহমান।
“সুতরাং জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠাই অন্তর্বর্তী সরকারের সকল সংস্কার কার্যক্রমের প্রথম ও প্রধান টার্গেট হওয়া জরুরি। এজন্যই আমরা মনে করি অগ্রাধিকারভিত্তিতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা জবাবদিহিমূলক সরকার এবং সংসদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখেই সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া দরকার”।
জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া সংস্কার প্রক্রিয়ায় জনগণের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছাড়া উন্নয়ন, গণতন্ত্র কিংবা সংস্কার কোনটিই টেকসই এবং কার্যকর হয় না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
সংস্কারের পথ ধরে বাংলাদেশ নির্বাচনি রোডম্যাপে উঠবে বলে আশাপ্রকাশ করে মি. রহমান বলেন, “তবে এ সরকার যেন পথ হারিয়ে না ফেলে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে”।
গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দেশে মাফিয়া শাসন কায়েম করেছে অভিযোগ করে মি. রহমান বলেন, “ খোদ বিচার বিভাগকেই ফ্যাসিবাদের সূতিকাগারে পরিণত করা হয়েছিল। পতিত স্বৈরাচার পলায়ন করলেও তাদের দোসররা এখনো রয়ে গেছে”।
নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসন এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যেন সবার কাছে তা গ্রহণযোগ্য হয় এ দাবিও করেছেন মি. রহমান।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দলীয় নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে মি. আলমগীর বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সুযোগ আমরা পেয়েছি, মনে রাখতে হবে আমরা সেই সুযোগ যেন হেলায় না হারাই। আপনারা হচ্ছেন গণতন্ত্রের ভ্যানগার্ড, এজন্য আপনাদেরকেই গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে”।
এ সমাবেশকে ঘিরে প্রায় কয়েক হাজার বিএনপির নেতাকর্মী সমবেত হয় নয়াপল্টনে।