
বিভিন্ন সূত্র জানায়, ৪ থেকে ৭ মে বাংলাদেশের পাঁচটি জেলা দিয়ে ১৬৭ জনকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে ভারত। তাদের মধ্যে ৭৩ জনকে খাগড়াছড়ি, ৪৬ জনকে কুড়িগ্রাম, ২৩ জনকে সিলেট, ১৫ জনকে মৌলভীবাজার, ১০ জনকে চুয়াডাঙ্গায় পুশ ইন করা হয়েছে।
এ ছাড়া খাগড়াছড়ি ও কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে এক দিনেই অন্তত ১১০ জনকে বাংলাদেশে পুশ ইন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন নিজেদের বাংলাদেশি বলে পরিচয় দিয়েছেন, বাকি সবাই রোহিঙ্গা ও ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ভারতের একটি বিমান সংস্থার অনির্ধারিত ফ্লাইটে বিএসএফের তত্ত্বাবধানে প্রায় ২০০ লোককে গুজরাট থেকে ত্রিপুরায় নেওয়া হয়। তাদের একটি অংশকে সীমান্তের বিভিন্ন অংশ দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়।
ভারত থেকে একটি সূত্রে জানা গেছে, গুজরাট থেকে ত্রিপুরায় পৌঁছানো লোকজনের একাংশ এখনো আগরতলায় রয়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো হতে পারে।
কূটনৈতিক সূত্রগু বলছে, গত কয়েক দিনের পুশ ইনের পদক্ষেপগুলো গভীর উদ্বেগের, যা চূড়ান্তভাবে সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলছে এবং জনমনে নেতিবাচক মনোভাবও তৈরি করছে।
পুশ ইনের ওই পদক্ষেপগুলো ১৯৭৫ সালের সীমান্ত কর্তৃপক্ষের জন্য যৌথ ভারত-বাংলাদেশ নির্দেশিকা, সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি)-২০১১ এবং বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের আলোচনায় দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মত সিদ্ধান্তের পরিপন্থী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে অতীতে কর্মরত বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলছেন, ভারত থেকে এভাবে কয়েক দিনের পুশ ইনের নজির সাম্প্রতিক অতীতে নেই। তা ছাড়া পুশ ইন করলে সব সময় পুশ ব্যাক করা হতো।
২০০৩ সালের জানুয়ারিতে লালমনিরহাট সীমান্তে দুই শর বেশি মানুষকে বাংলাদেশে পুশ ইন করার চেষ্টা করেছিল ভারত। কিন্তু ঢাকার অনমনীয় অবস্থানের কারণে সীমান্তের শূন্যরেখায় তাদের থাকতে হয়েছিল প্রায় দুই মাস। তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোর্শেদ খান এ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যশোবন্ত সিনহার সঙ্গে আলোচনার জন্য দিল্লি গিয়েছিলেন। দিল্লির সঙ্গে আলোচনার ঠিক আগেই দেখা যায়, সীমান্তের শূন্যরেখায় প্রায় দুই মাস ধরে থাকা ওই লোকজন আর নেই।