আত্নহত্যার কারণ, প্রতিকার ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে ‘অ্যাপস’

বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যা একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা । আত্মহত্যা প্রতিরোধ এখনো বিশ্বের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সুইসাইড প্রিভেনশন (আইএএসপি) সংস্থাটির এক গবেষণায় দেখা যায়, পৃথিবীতে প্রতিবছর আট লাখ মানুষ আত্মহত্যা করেন। তার মানে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন আত্মহত্যা করে থাকেন। ধারনা করা হয়েছে ২০২০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৫ লাখ। ঐ গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, ১৫-২৯ বছরের মৃত্যুর মধ্যে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যু হচ্ছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ। পৃথিবীর সব মৃত্যুর ১দশমিক ৪ শতাংশ হচ্ছে আত্মহত্যাজনিত। এছাড়া যতজন আত্মহত্যা করেন, তার প্রায় ২৫ গুণ বেশি মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এবং তার চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ আত্মহত্যা করার কথা চিন্তা করেন।
বাংলাদেশেও দিন দিন আত্মহত্যার প্রবণতা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে,শুধু ২০১৮ সালেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল ২৩ জন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এছাড়াও বহুবিদ কারণে প্রতিনিয়ত আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায় দেশের আনাচে কানাচে। গবেষণায় দেখা যায়,এদের বৃহত্তর একটা অংশ আত্নহননের পথ বেছে নেন মানসিক বিষণ্ণতা থেকে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই তিন জন তরুণ শিক্ষার্থী “আবু সাইদ হীমু, আব্দুল কাইয়ুম ও তানজিলা শেখ” তাদের BSc. in CSE এর শেষ বর্ষের প্রজেক্ট হিসেবে, জনাবা আয়েশা সিদ্দিকা (Senior Lecturer, CSE, WUB) এর তত্তাবধয়নে এমন একটি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করেন, যার মাধ্যমে যেসব মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা বা চিন্তা করতেছেন, তাদেরকে এই চিন্তা থেকে মুক্ত করার এবং বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণ করে তাদেরকে কে সাজেষ্ট করার পলিসি মূলক একটি অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপস তৈরি করেছেন, যেটির নাম দিয়েছেন “Staying Alive”। এই অ্যাপসে প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে ভিক্টিমদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করে করে এবং সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁদেরকে কাউন্সিলিং করা ছাড়াও তাদের উদ্দেশ্য ছিল আত্মহত্যা প্রতিরোধ ও আত্মহত্যা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এজন্য অ্যাপসে আছে আত্মহত্যা সচেতনতামূলক নানান তথ্য যেমন আত্মহত্যা করার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের বিভিন্ন উপায়। তাছাড়া এই অ্যাপসের মাধ্যমে কেউ চাইলে জরুরী ভিত্তিতে ন্যাশনাল হেল্প লাইন থেকেও সাহায্য পেতে পারেন ।
ভবিষ্যতে এই অ্যাপ নিয়ে কি পরিকল্পনা আছে,এমন প্রশ্নের জবাবে জনাবা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ভবিষ্যতে অ্যাপ টিতে লাইভ কাউন্সিলিং ফিচার এড করা হবে। তখন ব্যবহারকারী চাইলেই রেজিস্টার কাউন্সিলর বা সাইকোলজিষ্ট এর সাথে সরাসরি কথা বলতে পারবে। অ্যাপটি খুব শীঘ্রই গুগল প্লে ষ্টোরে পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাটিভি/প্রিন্স