বাংলাদেশের একমাত্র ডাবলডায়ল দুই কাটা ঘড়ির বেহাল দশা

রাজধানী ঢাকার বাইরে প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র বাসভবন নাটোরের উত্তরা গণভবণ। ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আজও সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি। এই স্থাপনার প্রবেশদ্বার ভ্রমন পিপাসুদের অন্যতম আকর্ষণ। প্রবেশদ্বারে রয়েছে, তৎকালীন ইটালীর ফ্লোরেন্স থেকে আনা বিশেষ মেকানিকাল ডাবলডায়াল দুইকাটা ঘড়ি।

প্রায় দুইশ বছর ধরে ফটকের দুইপাশে সঠিক সময় দিয়ে আসছে এ ঘড়িটি। তবে কালের সাক্ষী ঘড়িটি হারাতে বসেছে তার ঐতিহ্য। এক সময় কয়েক মাইল দূর থেকে শোনা যেত যে ঘন্টা ধ্বনি, এখন তা বিকল হয়ে পড়ে আছে। ঐতিহাসিক এ ঘড়িটি রক্ষণাবেক্ষনের দাবি স্থানীয়দের। ঘড়ি মেরামতের প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস, জেলা প্রশাসকের।

নাটোরের ঐতিহাসিক দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি যা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বাসভবন উত্তরা গণভবন দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষনের শীর্ষে। দর্শনীয় এ স্থানে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে। উত্তরা গণভবনের অন্যতম আকর্ষণ প্রধান ফটকের মাঝখানের ঘড়িটি। যা অনন্য এক প্রাচীন নিদর্শণ।

উপমহাদেশের একমাত্র ডাবলডায়াল দুইকাটা এ ঘড়ি চালাতে বিদ্যুৎ বা ব্যাটারীর প্রয়োজন হয়না। এতে একবার চাবি দিলে এক সপ্তাহ আর কোন কিছুর প্রয়োজন হয়না। মেকানিক্যাল সিস্টেমের এ ঘড়িটিতে দুটি চাবি দেয়ার ব্যবস্থা আছে। লোহা,তামা যন্ত্রাংশ এবং একদিকে ৮ মন ও অপরদিকে ১২ মন ওজনের পাথর এর সময় ও ঘন্টা বাজাতে প্রতি মুহূর্তে কাজ করছে।

মেকানিক্যাল সিস্টেম দীর্ঘদিন চলার কারনে লোহা ও তামার বিভিন্ন পিনিয়াম ক্ষয় হয়ে গেছে। ফলে কোন রকমে চলছে এ ঘড়ি। প্রায় দুইশ বছর নিরলসভাবে সময় জানান দেয়া ঘড়িটি কিছুদিন ধরে প্রতিঘন্টায় আর বাজেনা ঘন্টা। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করা গেলে আগের মত ঘন্টা ধ্বনিতে মুখোরিত হবে চারপাশ। বলছেন, পর্যটক ও স্থানীয়রা।

বিরল মেকানিক্যাল ঘড়ির কাজ খুব সুক্ষ হওয়ায় এটি মেরামত করতে সময় লাগছে বলে জানান, উত্তরা গণভবনের ঘড়ি চালক। আর ঘড়িটি মেরামতে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন, জেলা প্রশাসক।

প্রায় দুইশ বছরের ঐতিহ্য কালের সাক্ষী এ ঘড়িটি সংস্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেবে এবং এর ঘন্টা ধ্বনিতে মুখর হবে পুরো এলাকা, এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসী ও পর্যটকদের।

মেহেদী বাবু, নাটোর প্রতিনিধি