fbpx
দেশবাংলাজনদুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বাড়তে থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

রোববার (১৯ জুন) সকালে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটিার বেড়ে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

জেলার ৯টি উপজেলার বন্যাকবলিত ৩০টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের প্রায় ১৫০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর, রৌমারী, উলিপুর, চিলমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির বেশি অবনতি হওয়ায় বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

বন্যার কবলে ক্লাসরুম ও মাঠে পানি ওঠায় মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের ৬৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ভারী বর্ষণে কুড়িগ্রাম-রমনা রুটে কিছু কিছু স্থানে রেললাইনের মাটি ধসে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর পাট, তিল, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়াসহ নষ্ট হচ্ছে মরিচ ক্ষেত।

বন্যার পানির তীব্র স্রোতে নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের স্লুইসগেট সংলগ্ন ইসলামপুরে, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মুড়িয়ারহাট ও নামাহাইল্যায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে মেইনল্যান্ডের ফসল তলিয়ে গেছে।

ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তার ইউনিয়নে এক হাজার দুইশত বাড়ি পানিতে নিমজ্জিত। প্রায় ৬ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার পাশাপাশি আরও কমপক্ষে চার হাজার মানুষ পানিবন্দি। গত তিনদিনে নদী ভাঙন ও পানির তোড়ে আরাজিপাড়া, রলাকাটা, চর যাত্রাপুরের ৬০টি পরিবার বাড়িঘর হারিয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে এরই মধ্যে উদ্ধার কার্যক্রম এবং শুকনো খাবার বিতরণ শুরু হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলায় মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার কারণে বন্ধ রয়েছে এবং একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। বন্যায় তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা বেড়েছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন শেষে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে নেওয়া হবে। যাতে বন্যা পূনর্বাসন প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় তাদেরকে সহযোগিতা করা যায়।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক জানান, বন্যায় মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় ৯টি উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষের সহায়তার জন্য ২৯৫ টন চাল, নগদ ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শুকনা খাবার এক হাজার প্যাকেট, শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, উপজেলা পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করে বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাটিভি/শহীদ

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button