অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার রাতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভকামনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাংলাদেশের সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমে নিজের এক্স অ্যাকাউন্ট (সাবেক টুইটার) থেকে বৃহস্পতিবার মোদী এ বিষয়ে টুইট করেন।
ওই টুইট বার্তায় মোদী বলেন “আমরা হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে স্বাভাবিক অবস্থায় দ্রুত ফিরে আসার আশা করি। শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য আমাদের উভয় জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এদিকে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার স্থানীয় সময় বুধবার তার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ আশা প্রকাশ করেন।
ম্যাথিউ মিলার বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত হবে গণতন্ত্রের মূলনীতি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সব সিদ্ধান্ত নেয়া।”
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বলেও তিনি জানান।
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যদের শপথ গ্রহণকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ এখন ক্রান্তিকাল চলছে। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে জরুরি কাজ হবে, গণতান্ত্রিক পরিবেশে নির্বাচন আয়োজন এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনে সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
দেশের জনগণ ও তরুণ সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য এই শপথ গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
ইইউ বাংলাদেশের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে এবং গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের জটিল এ কাজে তাদের সহায়তা করতে আগ্রহী।
নতুন এই প্রশাসন সুশাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ার অংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে চীন। শুক্রবার বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানান চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান। বিনিময় ও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এই সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠন সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে চীনা মুখপাত্র লিন জিয়ান উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশ একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে এবং চীন তাকে স্বাগত জানাচ্ছে।
লিন জিয়ান আরও বলেন, চীন কঠোরভাবে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি অনুসরণ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং বাংলাদেশি জনগণের স্বাধীনভাবে উন্নয়নের পথ নির্ধারণকে চীন সম্মান করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সকল মানুষের সাথে আমাদের ভালো প্রতিবেশী এবং বন্ধুত্বের নীতিতে দৃঢ়ভাবে অটল আছি।’
চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্ব দীর্ঘ ও গভীর উল্লেখ করে চীনা মুখপাত্র জানান, চীন বাংলাদেশের সাথে তার সম্পর্ককে মূল্য দেয় এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক আদান-প্রদান ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে এবং ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।