ফুল কোর্ট মিটিং ডাকায় হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের ডাক ছাত্র আন্দোলনের, সভা স্থগিত
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতিকে নিয়ে শনিবার একটি জরুরি ফুল কোর্ট সভা ডাকার পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আদালত ঘেরাও এর কর্মসূচি দিলে সেটি স্থগিত করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
দুপুরের দিকে শত শত শিক্ষার্থী হাইকোর্ট ঘেরাও করে রাখে।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিচারপতিদের সভাটি করার কথা ছিল। কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে আদালত পরিচালনা করা যায় ও বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলকোর্ট সভা ডেকেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
তবে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা না করে ফুল কোর্ট মিটিং ডাকায় হাইকোর্ট অভিমুখে মিছিলের ডাক দেয় এই প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়করা।
শনিবার অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
এজন্য সকাল ১০টার মধ্যে কার্জন হলের গেটে সবাইকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, “পরাজিত শক্তির যেকোনো প্রকার ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই এর প্রতিবাদে জড়ো হয়েছেন”।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতিদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
একইসঙ্গে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের অপসারণ দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
তিনি বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হয়েছেন।
এ বিষয়ে সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ শনিবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরও বলেন, “আমরা আগেই প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিলাম। ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদের উসকানি দিলে এর ভয়াবহ পরিণাম ভোগ করতে হবে। অনতিবিলম্বে বিনা শর্তে প্রধান বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করুন এবং ফুল কোর্ট মিটিং বন্ধ করুন”।
এ অবস্থায় শনিবার সকালে ফুল কোর্ট সভা স্থগিত করেন প্রধান বিচারপতি।
গত বুধবার থেকে দেশের সব আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। রোববারের মধ্যে হাইকোর্টসহ সব আদালত খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন আইনজীবীরা।
বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনাক্রমে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এ নিয়ে কোর্ট প্রশাসন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনাক্রমে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের অধিবেশন (আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচার কার্যক্রম) পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেছেন।