fbpx
অন্তর্বর্তী সরকারবাংলাদেশ

৬ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়রি) বিকেলের পর বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে আলাদা আলাদা ৬টি ফাইলে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ফেসবুক পেজে লেখেন, ৬ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আপলোড করা হয়েছে। বিস্তারিত জানা যাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে।

এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আসিফ নজরুল জানিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা বিভিন্ন খাতের সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন শনিবার প্রকাশ করা হবে।

সে সময় আসিফ নজরুল বলেন, ছয় সংস্কার কমিশন প্রধানদের সঙ্গে ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বৈঠক করেছেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান হিসাবে এ বৈঠক করেন তিনি। এ সময়ে তিনি সংস্কার প্রতিবেদন বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন।

আসিফ নজরুল জানান, আজ ছয় কমিশনের প্রধানরা তাদের আশু করণীয় এবং সংস্কার বিষয়ে মধ্যমেয়াদে বা দীর্ঘমেয়াদে কী করা যেতে পারে, সে বিষয়ে সুপারিশনামা পেশ করবেন। এই সুপারিশ এবং সংস্কার প্রতিবেদন আমরা রাজনৈতিক দল এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর কাছে পৌঁছে দেব। তাদের সঙ্গে আলোচনা এবং সমঝোতার ভিত্তিতে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। আমরা আশা করছি এ বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেই তারিখ নির্ধারণ করা হবে। ওই সভার সভাপতিত্ব করবেন ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনুস রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে দেন। এসব কমিশনকে ৯০ দিন বা তিন মাসে অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

এরপর নির্ধারিত সময়ের ১৫ দিন পর গত ১৫ জানুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ সংস্কার ও দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক এই চারটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করা হয়। অপরদিকে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেয়।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির কাছে পাঠানো হবে। এরপর রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তির সঙ্গে আলোচনা এবং সমঝোতাক্রমে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে হবে।‌ এ তারিখ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে।

প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ১ মাস ৩ দিনের মাথায় গত ১১ সেপ্টেম্বর বহুল আলোচিত গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা। এর মধ্যে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয় সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারকে। পুলিশ সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেনকে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব পান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান।

দুদক সংস্কার কমিশনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে প্রধান করা হয়।

একইসাথে এই কমিশনগুলোর প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যেটির প্রধানের দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সদস্য সচিব হন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদনের পর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে সরকার।

এরপর চূড়ান্ত পর্যায়ে শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ৩ থেকে ৭ দিনব্যাপী একটি পরামর্শ সভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button