
বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ বা এলাকার মাঝে বাংলাদেশ এবার ১৪তম অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী বৈশ্বিক জোট ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই)-২০২৪ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটির মতে, এবার দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্কোর হয়েছে ২৩।
এদিকে, শুধু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দুর্নীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়তে।
মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
টিআই বলেছে, ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩, যা গতবারের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম। গত বছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৪।
সমান স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে কঙ্গো ও ইরান।
ইফতেখারুজ্জামান জানান, ২০১২ সালের পর এবার দুর্নীতি সূচকে সবচেয়ে কম স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। ভুটান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের স্কোর কমেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের পর রয়েছে আফগানিস্থান। ৭২ স্কোর নিয়ে ভুটানের অবস্থান ১৮তম। বৈশ্বিক গড় ৪৩ থেকেও বাংলাদেশের স্কোর ২০ কম, যার কারণে অত্যন্ত গুরুতর দুর্নীতি সমস্যাযুক্ত ১০১টা দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটা।
তিনি বলেন, কর্তৃত্বপরায়ণ স্বৈরশাসনের কারণে, দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্বে থাকা সস্থাগুলোতে রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতিবাজদের পুরস্কৃত করার কারণে সূচকে অবনমন হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ইফতেখার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দখলদারি চাঁদাবাজি বহাল রয়েছে, শুধু লোক বদল হয়েছে। দুদক বড় বড় দুর্নীতিবাজদের নিয়ে কাজ শুরু করেছে। দেখা যাক তারা কতটুকু সফল হয়।
সূচকের বিশ্লেষণ বলছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের স্কোর গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অর্থাৎ স্কোর বিবেচনায় বাংলাদেশের নিম্নমুখী যাত্রা সুস্পষ্ট। ২০১২ সাল থেকে সূচকে ব্যবহৃত ১০০ সেলে বাংলাদেশের স্কোর ২০২২ সাল পর্যন্ত ‘২৫ থেকে ২৮’-এর মধ্যে আবর্তিত হয়েছে। ২০২৩ সালে স্কোর এক পয়েন্ট অবনমন হয়ে ২৪ এবং ২০২৪-এ আরও এক পয়েন্ট অবনমন হয়ে ২৩ হয়েছে।
বাংলাদশে থেকে পাচার করা টাকা যেসব দেশে যায় এমন দেশগুলো- দুর্নীতি কম এমন তালিকার শীর্ষে রয়েছে। যেমন সিঙ্গাপুর ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়। সুইজারল্যান্ড ৮১ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম। অস্ট্রেলিয়া ১০তম, কানাডা ১৫তম, হংকং ১৭তম, যুক্তরাজ্য ২০তম, সংযুক্ত আরব আমিরাত ২৩তম, যুক্তরাষ্ট্র ২৫তম ইত্যাদি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।