বানিজ্য সংবাদবাংলাদেশ
বাংলাদেশকে ১৬০০ মেগাওয়াটের পুরোটাই সরবরাহ করবে আদানি: রিপোর্ট

বাংলাদেশকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের পুরোটাই সরবরাহ করবে ভারতের কোম্পানি আদানি পাওয়ার। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ সম্পর্কিত এক আবেদনে সাড়া দিয়েছে পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহে সম্মত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে বিদ্যুতের দাম কমানো ও কর সুবিধা চেয়ে যে আবেদন জানানো হয়েছিল তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায় গত বছরের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে আদানি গ্রুপ। শীত মৌসুমে নিম্ন চাহিদার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক করার অনুরোধ জানালে গত ১ নভেম্বর ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয় তারা।
এরপর আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুম সামনে রেখে ১৬০০ মেগাওয়াটের পুরোটাই সরবরাহের অনুরোধ জানায় ঢাকা। এতে সাড়া দিয়ে আগামী সপ্তাহ থেকে পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজি হয়েছে আদানি পাওয়ার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্রের বরাতে এমনটা জানিয়েছে রয়টার্স।
ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় অবস্থিত আদানি গোষ্ঠীর কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। এ কেন্দ্রে ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে। এর মধ্যে এখন একটি ইউনিট থেকে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজি হলেও দাম কমানোর অনুরোধ নাকচ করে দিয়েছে আদানি। আদানি পাওয়ার সম্পর্কে একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, ‘আদানি পাওয়ার ছাড় দিতে রাজি নয়, এমনকি ১০ লাখ ডলারও নয়। বাংলাদেশ কেনো ছাড় পায়নি; আমরা পারস্পরিক বোঝাপড়া চাই; কিন্তু এ বিষয়ে তারা চুক্তির শর্ত টেনে আনছে।’
এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলেও বিপিডিবির চেয়ারপারসন মো. রেজাউল করিম রয়টার্সের আহ্বানে সাড়া দেননি। এর আগে রয়টার্সকে তিনি বলেছিলেন, ‘আদানির সঙ্গে এখন আমাদের বড় কোনো সমস্যা নেই এবং তারা পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেছিলেন, আদানি পাওয়ারের পাওনা পরিশোধের পরিমাণ মাসে সাড়ে আট কোটি ডলার থেকে বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে আদানি পাওয়ারের মুখপাত্রও রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এর আগে রয়টার্সের আরেক সংবাদ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতিতে তারা জানায়, ক্রেতার চাহিদার সাপেক্ষে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়; ক্রেতাদের চাহিদা সময় সময় পাল্টায়।
গত ডিসেম্বর মাসে আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র বলেছিলেন, বিপিডিবির কাছে তাদের পাওনা প্রায় ৯০ কোটি ডলার; যদিও মো. রেজাউল করিম তখন বলেছিলেন, এই অঙ্ক ৬৫ কোটি ডলার। মতভিন্নতা মূল কারণ হলো বিদ্যুতের শুল্ক হিসাবের পদ্ধতি। এর আগে বিপিডিবি আদানি পাওয়ারের কাছে কয়েক লাখ ডলারের কর সুবিধা এবং গত বছরের মে মাস পর্যন্ত যে ছাড় ছিল, তা পুনর্বহাল চেয়ে চিঠি দিয়েছিল।