fbpx
বাংলাদেশআওয়ামী লীগউন্নয়নপ্রধানমন্ত্রীবিএনপিরাজনীতিসরকার

যেকোনো পরিস্থিতি সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো পরিস্থিতি সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশকে অগ্নিসংযোগের মতো সব বাধা মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হবে।

আজ রবিবার (৯ নভেম্বর) অপরাহ্নে নরসিংদীতে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন পরবর্তী নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাঁরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মত অগ্নিসন্ত্রাস বা মানবসৃষ্ট সকল দুর্যোগ অতিক্রম করেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। দেশবাসীকে শুধু সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে।”

এরআগে তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম এবং বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন সার উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তি ভিত্তিক ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন করেন।

তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে কৃষকরা সারের জন্য আন্দোলন করেছিল। সার চাওয়ার কারণে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয় গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জ এবং টাঙ্গাইলের ঘাটাইলসহ বিভিন্ন অঞ্চলে। তখনই কথা দিয়েছিলাম কৃষকদের সারের জন্য ছুটতে হবেনা। সার কৃষকের ঘরে পৌঁছে যাবে। এজন্য ২০০৯ সালে সরকারে আসার পর যত কষ্টই হোক সারের কোন ঘাটতি আমরা হতে দেইনি।

চাপাইনবাবগঞ্জের কানসার্টে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর গুলি চালিয়ে ২০ জনকে হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেখানে বেসরকারি খাতে একটি এবং সরকারীভাবেও একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ২০১৩ সালে বিএনপি আজকের মতন অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়। কর্মরত প্রকৌশলী সেই আগুনে পুড়ে মারা যায়। এভাবেই দেশের সম্পদ সে সময় একে একে তারা ধ্বংস করেছে। এখন আবারও তখনকার মত অগ্নিসন্ত্রাস তারা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, আমি জানিনা তাদের চেতনা কবে ফিরবে বা দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ আসবে? প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন,আমরা যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করি তেমনি অগ্নিসন্ত্রাস বা মানবসৃষ্ট দুর্যোগ নিশ্চই অতিক্রম করেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। দেশবাসীকে বলবো সাহসের সাথে যে কোন অবস্থা মোকাবেলা করতে।

দেশি-বিদেশি চক্রান্তে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রীর মুছলেখা দিয়েছিল। আর তিনি (শেখ হাসিনা) তা না করে বলেছিলেন, আমাদের কি পরিমান গ্যাসের রিজার্ভ আছে তার অ্যাসেসমেন্ট করে দিতে, তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। কেননা দেশের সম্পদ আগে দেশের মানুষের কাজে লাগাতে হবে। সেদিন সেই চক্রান্তে সায় দিলে আজকে এই সার কারখানা করতে পারতেন না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “দেশের সম্পদ বিক্রী করে ক্ষমতায় যেতে হবে বঙ্গবন্ধুর মেয়ে সেই দৈন্যতায় ভোগে না। ক্ষমতা তার জন্য বড় কিছু নয়, দেশের মানুষের কল্যাণই বড়।”

তিনি বিএনপি’র মানসিক দৈন্যতার আরেকটি উদাহারণ তুলে ধরে বলেন, যখন ’৯৬ পরবর্তী তাঁর সরকার জাতীয় সংসদে দেশকে বিএনপি’র রেখে যাওয়া খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ন দেশে পরিণত করার ঘোষণা করে তখন খালেদা জিয়া ও তার সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো নয় তাহলে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যাবেনা। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের উপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।

প্রধানমন্ত্রী ঋণ সহায়তা প্রদানের জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাপান ও চীনের রাষ্ট্রদুতের মাধ্যমে তাদের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এই ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পটি জাপানের মিতসুবিশি হেভী ইন্ডাষ্ট্রিজ সিসি সেভেন চায়না কনসোর্টিয়াম বাস্তবায়ন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী পরে মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহাসমাবেশে যোগ দেন।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button