fbpx
আন্তর্জাতিকঅন্যান্য

আবাসন সংকট কাটাতে ধনী বিদেশিদের ‘সংহতি’ ভিসা দেবে পর্তুগাল

বিনিয়োগের মাধ্যমে পর্তুগালে স্থায়ীভাবে বসতি গড়ার সুযোগ খোঁজা ধনী বিদেশিদের জন্য গোল্ডেন ভিসার আদলে ‘সলিডারিটি’ বা ‘সংহতি’ ভিসা চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির নতুন সরকার৷

আবাসন সংকটে ভুগছে পর্তুগাল৷ তাই অভিবাসীদের জন্য বাসস্থান এবং দেশটির নাগরিকদের সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন দিতেই গোল্ডেন ভিসার মতো একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে৷

এ তথ্য দিয়েছেন দেশটির মন্ত্রিপরিষদ বিষয়ক মন্ত্রী আন্তোনিও লাইতো আমারো৷মন্ত্রী বলেন, ‘সলিডারিটি’ বা ‘সংহতি’ ভিসা নামের এই প্রকল্পটি গোল্ডেন ভিসা প্রকল্পের পরিপূরক হবে৷ গোল্ডেন ভিসা প্রকল্পের আওতায় ২০১২ সাল থেকে অ-ইউরোপীয় ধনী নাগরিকদের বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে পর্তুগালে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে৷

গোল্ডেন ভিসা চালুর পর থেকে এর আওতায় বিদেশিরা ৭৩০ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করেছেন পর্তুগালে৷ তবে সমালোচকেরা বলছেন, এই ভিসা প্রকল্প আবাসন সংকটকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে৷ পর্তুগালের সদ্য বিদায়ী সরকার গত বছরের ১৬ মার্চের পর থেকে গোল্ডেন ভিসা প্রকল্প বন্ধ করে দেয়৷এটি বন্ধে পর্তুগালের উপর ইউরোপীয় ইউনিয়নও চাপ দিয়ে আসছিল৷

পর্তুগালে দীর্ঘমেয়াদে বসবাসে আগ্রহী ধনী বিদেশিরা রিয়েল এস্টেট বা আবাসন খাতে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন৷ কিন্তু সেই সুযোগ সীমিত করে এনেছিল আগের সরকার৷ বরং সংস্কৃতির বিকাশ, গবেষণা কিংবা কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে এমন উদ্যোগে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হচ্ছিল৷

২০০৭ সাল থেকে ইউরোপের যে-কোনো দেশের ভিসা নিয়ে আসা ব্যক্তিদের কাজের আওতায় নিয়মিত হওয়ার সুযোগ দিয়ে আসছিল লিসবন৷ করে দেয়৷ ২০১৮ সালে অনিয়মিত অভিবাসীদেরও জন্য এই সুযোগ করে দেয় সাবেক সোশ্যালিস্ট সরকার৷ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই প্রক্রিয়ার অবসান ঘটিয়েছে মাস দুয়েক আগে ক্ষমতায় আসা মধ্য-ডানপন্থি সরকার৷ নতুন নীতির আওতায় পর্তুগালে অনিয়মিতভাবে আসা বিদেশিদের নিয়মিত হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে৷

এই নীতি ঘোষণার পরদিন টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্ত্রিপরিষদ বিষয়ক মন্ত্রী লেইতো বলেন, ‘‘আমরা প্রচলিত প্রকল্পটি পরিবর্তন করিনি৷ তবে আমরা দুই ধরনের সংহতি ভিসা তৈরি করেছি৷”

তিনি বলেন, নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী আগ্রহী ধনী বিদেশিদের সাশ্রয়ী মূল্যের বাড়িতে বিনিয়োগে উত্সাহিত করা হবে, যাতে পর্তুগিজ নাগরিকেরা সুলভ মূল্যে বাড়ি কিনতে বা ভাড়া নিতে পারেন৷ এছাড়াও অভিবাসীদের জন্য বাসস্থান তৈরি এবং ইন্টিগ্রেশন প্রকল্পে অর্থায়নের সুযোগ দেয়া হবে৷

পর্তুগালে বসবাসরত অভিবাসীর সংখ্যা অন্তত আট লাখ৷ সংখ্যাটি এক দশক আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ৷ দেশটির অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানও রাখছেন এসব অভিবাসীরা৷ কিন্তু মাইগ্রেশন অবজারভেটরি বলছে, অভিবাসীদের চাকরির নিশ্চয়তা নেই এবং মজুরিও পাচ্ছেন কম৷

অনেকেই দেশটিতে থাকার জন্য বাসা খুঁজে পাচ্ছেন না৷এক বাসায় গাদাগাদি করে অনেকে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন৷ কেউ কেউ রাত কাটাচ্ছেন রাস্তায়৷ বাসা ভাড়া বেড়েছে তীব্রভাবে, বেড়ে গেছে বাড়ির দামও৷ পর্যটনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত লিসবন ও পোর্তো শহরে এ সংকট আরো তীব্র হয়েছে৷

গোল্ডেন ভিসা পেতে হলে আগ্রহী বিদেশি নাগরিককে বিনিয়োগের ধরনের উপর নির্ভর করে আড়াই থেকে পাঁচ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করতে হতো৷

লেইতো আমারো বলেন, সরকার নতুন সংহতি ভিসার জন্য বিনিয়োগের পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করেনি৷ তবে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে এক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ কম ধরা হবে৷

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। বাংলা টিভি

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button