fbpx
দেশবাংলাবাংলাদেশ

এক ঝাঁক তরুণ মেধাবীর গল্প

দারিদ্র্য যখন আকঁড়ে ধরে খামচে রক্তাক্ত করে তোলে, তখনও আমাদের দেশের অনেক মেধারী তরুনদের তাদের স্বপ্নের পথে চলতে বা হাটঁতে কোন রকম বাধা হয়ে দাড়াঁতে পারেনি। ভাঙতে পারেনি তাদের দেখা স্বপ্ন আর দৃঢ় প্রত্যয়কে। এমনই সম্ভাবনাময় উজ্জল ৩০ জন তারকাকে নিয়ে নারী মৈত্রী এবং এডুকো বাংলাদেশ আয়োজন করে ““Dream Plan sharing” এই শেয়ারিং মিটিং এ তারকারা শেয়ার করেন তাদের জীবনের কঠিনতম দিনগুলোর কথা যেখান থেকে আজ তারা সেরাদের সেরা অবস্থানে অবস্থান করছে।

নৃত্য শিল্পী ঐশি দেবনাথ বলছিলেন, তার স্বপ্ন ছিল ১০০ দানার ঘুঙুর তার হবে। কারণ নাচের সময় সে সবসময় ১০/১২ দানার ঘুঙুর পড়তো এর বাইরে কেনার সামর্থ্য তার ছিল না। নাচের জন্য পোষাক ক্রয় করার সামর্থ্য তার ছিল না। আজ তিনি STARS প্রকল্পের অর্থায়নে বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে ভর্তি হতে পেরেছে এবং তার প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ কিনতে পেরেছেন। তার মা বলছিলেন, আজ আমার মেয়ের তিন জোড়া ঘুঙুর এবং নাচের সকল ধরনের পোষাক রয়েছে।

ক্রিকেটার খালেদ হাসান রানা বলছিলেন, আমি একজন খেলোয়ার আমাকে নিয়মিত প্রোটিন খেতে হয়, জিম করতে হয় কিন্তু প্রায়ই আমি সকালের নাস্তা করতে পারতাম না যে কারণে ক্ষুদা পেটে আমি বেশি সময় প্রাকটিস করতে পারতাম না। কিন্ত নারী মৈত্রী এবং এডুকো বাংলাদেশের সহায়তায় আজ আমি নিয়মিত প্রোটিন গ্রহন করতে পারি আমার ক্রিকেট খেলার সামগ্রী কিনতে পারছি। বর্তমানে আমি ঢাকা লীগ (থার্ড ডিভিশন) এর  ক্যাপ্টেন। আমি স্বপ্ন দেখি জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বের মাঠে একদিন খেলবো”

ক্রিকেটার আবিদ বলেন, `এই প্রকল্পটি আমার কাছে একটি ম্যাজিক্যাল পয়েন্ট  যা আমাকে অনেক দিয়েছে।”

03

চিত্রশিল্পী দুর্জয় বলেন, `প্রত্যেকের জীবনে একজন হিরো থাকে আমার জীবনের হিরো নারী মৈত্রী আমি আমার রং তুলিতে নারী মৈত্রীর ছবি আকিঁ।”

আইভীর মা বলছিলেন, আমি বেশি দূর পড়াশুনা করতে পারিনি, আমার অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। আমার স্বামী একজন ভ্যান চালক। আমার মেয়ে আইভিকে পড়াশুনা করানো খুব কঠিন ছিল আমাদের জন্য। আমি কৃতজ্ঞ আমার মেয়েকে একবছর আর্থিকভাবে সকল ধরণের সহযোগীতা করার জন্য।”

02সুশীল সমাজের সৃধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন এই আয়োজনে। গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাচাঁর মেলার সহ-সভাপতি জনাব আবু তাহের বকুল বলেন, `যেসকল মেধাবীরা এই প্রকল্প থেকে বৃত্তি পাচ্ছে তারা যেন অর্থের অভাবে ঝরে না পড়ে সেজন্য আমি গেন্ডারিয়া এলাকায় যারা বাস করে তাদের জন্য ডোনার খুঁজে বের করবো। এছাড়াও আমাদের কচিকাচাঁ  থেকে তাদের জন্য সকল ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করবো।

বাড্ডা আলাতুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজের ইংরেজি প্রভাষক কামরুল ইসলাম বলেন, `সবাই কাজ করে কিন্তু মানুষের জন্য কাজ বা সেবা কতজন করতে পারে? এই প্রকল্পটি সত্যিকার অর্থে মানুষের জন্য কাজ করে। প্রকল্পের যারা ডিজাইন করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন মেধাবীদের খুজেঁ বের করে তাদের এতো সুন্দরভাবে বাচাঁর সুযোগ করে দেওয়া সত্যিকার অর্থেই সমাজের জন্য কাজ করা।’

ফোকাল পার্সন, নারী মৈত্রী, মাহফুজা আক্তার আমরীন বলেন, “এই প্রকল্প থেকে ৩০ জন মেধাবী একবছরের জন্য বৃত্তি পেয়েছে। কোনভাবেই যেন মেধাবীদের চলার পথ বন্ধ না হয়ে যায়। তিনি মনে করেন কারও সহযোগীতা ছাড়াই আমাদের প্রাণান্ত চেষ্টার মাধ্যমে আমাদের স্বপ্নে পৌঁছাতে হবে।”

প্রকল্প কর্মকর্তা আকরাম উদ্দীন বলেন,“প্রকল্পটি ছিল দারুন একটি প্রকল্প, যা আমার কর্মজীবনে আমি এমন ব্যাতিক্রমধর্মী প্রকল্প দেখিনি। আমি মনে করি ৩০ জনের অর্জনই আমার স্বপ্ন, ৩০ জনের সফলতাই আমার সফলতা।”

প্রজেক্ট ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম বলেন, “STARS প্রকল্পটি যেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলে আমাদের সেভাবে ভাবতে হবে। তিনি অনুরোধ করেন আজ যারা এখানে মেধাবী আছে তারা যেন একদিন প্রতিষ্ঠিত হয়ে প্রত্যেকে দশজন করে দায়িত্ব নেন।প্রকল্প সমন্বয়কারী তাসলিমা হুদা স্বপ্নাও এতে বক্তব্য দেন।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button