নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সব প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়: সিইসি

সংস্কার কমিশনের কয়েকটি প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা হবে বলেও জানান তিনি।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে নির্বাচন কমিশন বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) টকে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম অন্য কর্তৃপক্ষের হাতে থাকলে ইসি’র স্বাধীনতা খর্ব হবে।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৩ মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে পেরেছিলো। কারণ কী কী কাজ করতে হবে তা জানা ছিলো তাদের। কিন্তু বর্তমান কমিশন বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছে। যদি আইন ও বিধি ঠিক থাকে এই কমিশনও ৩ মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে পারতো বলে মন্তব্য করেন সিইসি।
তিনি বলেন, ‘আশা করি, উৎসবমুখর পরিবেশ ভোট করতে পারবো। প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জুনে আমাদের দেশে বর্ষা থাকে। এ বিষয়টিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। এই সময়কে ধরেই নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করা হয়েছে। আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।’
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের দেয়া কিছু প্রস্তাব ইসির ক্ষমতা খর্ব হবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘সংসদীয় স্থায়ী কমিটির হাতে নির্বাচন কমিশনের কোনো কাজ গেলে ইসির স্বাধীনতা খর্ব হবে। আমরা স্থায়ী কমিটির উপর নির্ভরশীল হতে চাই না। এই সংক্রান্ত সুপারিশ বাতিল করতে হবে। পার্লামেন্টারি স্টান্ডিং কমিটির মুখাপেক্ষী হলে ইসির ক্ষমতা খর্ব করা হবে। ভোটার হালনাগাদ এবং সীমানা নির্ধারণের জন্য ইসির বাইরে অন্য কারও হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের দেয়া প্রস্তাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সুপারিশ অনেক কিছু দেওয়া যায়। তবে তার বাস্তবায়ন করা কঠিন। সীমানা নির্ধারণে ইসির হস্তক্ষেপ না রাখার সুপারিশে দ্বিমত পোষণ করে তিনি বলেন, এটা ইসির এখতিয়ার।
সিইসি বলেন, ‘জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) দেওয়া লজিস্টিক সাপোর্টের কারণে ভোটার হালনাগাদ কাজ সময়ের আগেই শুরু করা গেছে।’
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘রুলস অব দ্য গেম না থাকায় নির্বাচনের কাজে আগাতে পারছে না ইসি। আইনি বাধার কারণে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, সংসদীয় সীমানা নির্ধারণের অনেক কাজ করা যাচ্ছে না। তাই আইনের সংশোধন জরুরি।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন জুনের হওয়ার যে কথা বলছেন তখন দেশে বর্ষাকাল থাকবে। সাধারণত এ সময়ে নির্বাচন হয় না। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন হয় তাহলে অক্টোবরের মধ্যেই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের কমপক্ষে দুই মাস আগে শিডিউল ঘোষণা করতে হবে। সেক্ষেত্রে আইন-কানুন, বিধি-বিধানের কাজ দ্রুত শেষ করার প্রস্তুতি রাখতে হবে।