fbpx
অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান উপদেষ্টাবাংলাদেশ

হাসিনা পৃথিবীর সব নিষ্ঠুরতা ছাড়িয়ে গেছেন: ড. ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য পৃথিবীর সব নিষ্ঠুরতা ছাড়িয়ে গেছেন। জাতিসংঘের রিপোর্ট পড়ে সবার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেছে। কী ভয়াবহতা! কীভাবে একজন প্রধানমন্ত্রী নিজ দেশের নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার পর লাশ লুকিয়ে ফেলার নির্দেশ দিতে পারেন! ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য তিনি পৃথিবীর সব নিষ্ঠুরতা ছাড়িয়ে গেছেন—এটাই জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ সফর করেছেন। তাকে সঙ্গে নিয়ে আমি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে গিয়েছি। ক্যাম্পে অবস্থানরত ১ লাখ রোহিঙ্গা শিশু, কিশোর, নারী, পুরুষ সবার সঙ্গে একসঙ্গে ইফতার করেছি। আমাদের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি পৃথক অধিবেশন আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ড যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজক হতে এগিয়ে এসেছে। এর পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী জুলি বিশপকে এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় মুখ্য ভূমিকা পালনের জন্য আমি আহ্বান জানিয়েছি। তিনি আমার প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশ সফরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও তরুণদের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সবাই জাতিসংঘের মহাসচিবকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন।

ড. ইউনূস বলেন, পতিত স্বৈরাচারের নিপীড়নের বর্ণনা উঠে এসেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের রিপোর্টে। গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ওপর শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ যে দমন-নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে এর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তারা।

 

তিনি বলেন, এ রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে যে, শেখ হাসিনা নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে। বিগত সরকার, আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী গোষ্ঠী ও সংগঠন একত্রিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল। মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশ শিশু। বিক্ষোভের সম্মুখসারিতে থাকার কারণে, আমাদের জুলাই-কন্যারা নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, এমনকি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কার্যালয়ের এই রিপোর্টকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিবেদনে যে সুপারিশ করা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সে সুপারিশগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই, যারা গণহত্যায় জড়িত ছিল, যারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে, যারা ইতোমধ্যে হত্যাকারী হিসেবে বিশ্বের কাছে স্বীকৃত তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবেই।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button