সংঘাত বন্ধে সম্মত রাশিয়া-ইউক্রেন

সংঘাত বন্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেন সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। সৌদি আরবে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত আসে।
হোয়াইট হাউস দুটি পৃথক বিবৃতিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির রূপরেখা দিয়েছে। দুটি বিবৃতিতেই বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দেশ কৃষ্ণসাগরে নিরাপদ নৌযান চলাচল নিশ্চিত, বল প্রয়োগ বন্ধ এবং সামরিক উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিক জাহাজের ব্যবহার রোধ করতে সম্মত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে সামরিক শক্তি ব্যবহার বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে। তিনি বলেন, চুক্তিটি এত বিস্তারিত নয় এবং এটি প্রথম পদক্ষেপ।
তারা মনে করেন, আলোচনার ধারাবাহিকতায় ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ আলোচনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বৈঠকে রুশ মধ্যস্থতাকারীদের প্রধান গ্রিগোরি কারাসিন বলেন, বৈঠকে গভীর ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছাতে এখনও সময় লাগবে। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব। জাতিসংঘসহ আরও দেশ এ আলোচনায় যুক্ত হবে।
এদিকে ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে সৌদিতে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল গতকালও বৈঠক করেছে। তবে যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে রাশিয়াকে বিশ্বাস করতে চাইছে না ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফের উপদেষ্টা সের্হি লেশচেঙ্কো দাবি করেছেন, নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার হাতে ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। এই ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে মস্কো নিজের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। ফলে শান্তি আলোচনা শেষমেশ অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। এর আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মস্কো শান্তি আলোচনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করতে চায়। এর মধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অব্যাহত রয়েছে।
ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়া ১৩৯টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ও ইস্কান্দার-এম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এতে বহু অবকাঠামোর ক্ষতি ও ৮৮ জন আহত হয়েছে। শতাধিক ড্রোন ভূপাতিত করার দাবিও করেছে কিয়েভ। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মস্কো একদিকে নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে, অন্যদিকে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলছে। শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে ফাঁপা বক্তব্য বাদ দিয়ে মস্কোকে অবশ্যই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।
অন্যদিকে সোমবার রাতে রুশ সেনাদের নিয়ন্ত্রণাধীন লুহানস্কে গোলাবর্ষণ করে ইউক্রেন। এই হামলায় তিন রুশ সাংবাদিকসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ হামলার কড়া সমালোচনা করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘ সাংবাদিক হত্যার নিন্দা জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা নিয়ে ট্রাম্পের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়া। সিএনএন।