ওমানে যেভাবে নতুন সুলতান নির্বাচন করা হয়
যেহেতু সদ্যপ্রয়াত সুলতান কাবুস বিয়ে করেননি এবং তিনি প্রকাশ্যে নিজের কোনো উত্তরাধিকারও নিয়োগ করে যাননি। ফলে কে হবেন নতুন সুলতান, এই নিয়ে শুরু হয় তুমুল গুনজন।
ওমানের আইন অনুযায়ী, ওমানের সুলতান পরিবারের ৫০ সদস্যবিশিষ্ট পরিষদ আগামী তিনদিনের মধ্যে একজন নয়া সুলতান নির্বাচিত করবে। তারা এ কাজে ব্যর্থ হলে ওমানের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, সামরিক পরিষদ, উপদেষ্টা পরিষদ এবং মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা সুলতান কাবুসের সিলমোহরকৃত একটি চিঠির মোড়ক উন্মোচন করবেন।
ওই চিঠিতে সুলতান গোপনে তার উত্তরাধিকার কে হবেন সে প্রস্তাব করে গেছেন। যারা চিঠিটি খুলবেন তারা তখন ওই ব্যক্তিকে ওমানের নয়া সুলতান ঘোষণা করবেন। ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে নিজের উত্তরাধিকার ঘোষণার জন্য দেশের উত্তরাধিকার প্রক্রিয়া সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন সুলতান কাবুস। যদিও তিনি কাকে নিজের উত্তরাধিকার মনোনীত করেছেন সেটি কখনও প্রকাশ করেননি।
সুলতান কাবুস তার উত্তরাধিকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে এতটা গোপনীয়তা অবলম্বন করেছেন যে, চিঠিতে যার নাম লেখা রয়েছে তিনি নিজেও হয়তো বিষয়টি জানেন না। এদিকে, ওমানের নতুন সুলতান নির্বাচিত হয়েছেন, সদ্যপ্রয়াত সুলতানের চাচাতো ভাই হাইথাম বিন তারিক আল-সাঈদ।
প্রসঙ্গত, ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাঈদ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে মারা গেছেন। ১৯৭০ সালে পিতার কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণ করার পর প্রায় অর্ধ শতাব্দি ওমান শাসন করেন ৭৯ বছর বয়সি সুলতান কাবুস। সুলতান কাবুস যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখন ওমান একটি দরিদ্র দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল।
কিন্তু তিনি ক্ষমতা হাতে নিয়ে দেশ পুনর্গঠনের কাজে হাত দেন এবং ওমানকে অন্যতম ধনী দেশে পরিণত করেন। প্রায় ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও ওমানে তার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা রয়েছে বলে মনে করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুলতান কাবুস মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক মতবিরোধ নিরসনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংকট নিরসনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তার মৃত্যুতে ওমানে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করার পাশাপাশি বলা হয়েছে টানা ৪০ দিন দেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।