fbpx
অন্যান্যবাংলাদেশ

পরম যত্নে সংরক্ষণে বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষরিত একটি চেক

বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে স্বাক্ষর করা অনুদানের একটি চেক পরম যত্নে দীর্ঘদিন থেকে সংরক্ষণ করে রেখেছেন আগৈলঝাড়ার এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান রাজিব সেরনিয়াবাত। সুযোগ পেলে চেকটি বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে সরাসরি তুলে দেয়ার কথাও জানান তিনি।

রাজিব এই চেক প্রসঙ্গে বলেন, ২০০১ সালে বাবা-মারা যাওয়ার আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে স্বাক্ষরিত অনুদানের একটি চেক হাতে দিয়ে সংরক্ষণের দায়িত্ব দেন। মৃত্যুর আগে বাবা আমাকে বলেছেন- ‘মনে করো এটি একটি চেক নয়, এই হলো স্বয়ং বঙ্গবন্ধু। আর এই চেকে যে কলম দিয়ে বঙ্গবন্ধুু স্বাক্ষর করেছেন, সেই কলমের কালি হচ্ছে তোমার মুক্তিযোদ্ধা ভাই রকিব এর রক্ত।

আরও জানা যায়, ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে রকিবের বাবা সেকান্দার আলী সেরনিয়াবাতকে তিন হাজার টাকার অনুদানের একটি চেক প্রদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু নিজের স্বাক্ষর রয়েছে ওই চেকটিতে। চেকটিতে উল্লেখ রয়েছে-‘প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল, সোনালী ব্যাংক স্থানীয় কার্যালয়, ঢাকা। একাউন্ট নং- ৪৬৯৩।’

চেকটি সেকান্দার আলীর হাতে পৌঁছে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে। এরপর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্ব-পরিবারে শহীদ হওয়ার পর তার স্মৃতি ধরে রাখতে অনুদানের টাকা আর তোলেননি মুক্তিযোদ্ধা রকিব সেরনিয়াবাতের বাবা সেকান্দার আলী।

পরিবারের এক সদস্য চেকটি ব্যাংকে জমা দিয়ে টাকা তুলতে গেলে সেখান থেকেও চেকটি ফেরত আনেন সেকান্দার আলী। পরিবারের অভাবের মাঝেও সন্তানহারা বাবা পরম যত্নে চেকটি সংরক্ষণ করে রাখেন তার কাছে।

প্রসঙ্গত, বরিশাল জেলার তৎকালীন গৌরনদী বর্তমান আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরাল গ্রামে আব্দুর রকিব সেরনিয়াবাতের জন্ম। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও গৌরনদী পাক হানাদারমুক্ত হয়েছিল ছয় দিন পর ২২ ডিসেম্বর।

ওই সময় সরকারি গৌরনদী কলেজের পাক সেনাদের স্থায়ী ক্যাম্পে অবস্থানরত সেনা সদস্যদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে রকিব সেরনিয়াবাত ছিলেন অন্যতম।

দেশ স্বাধীনের পর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রকিব সেরনিয়াবাত ১৯৭৪ সালে সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ৪ এপ্রিল রাতে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে আততায়ীর গুলিতে রকিব সেরনিয়াবাত নিহত হন।

গৌরনদীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশেই দাফন করা হয় বঙ্গবন্ধুর বোন জামাতা ও তৎকালীন প্রভাবশালী মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের স্নেহধন্য মুক্তিযোদ্ধা রকিব সেরনিয়াবাতকে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button