মহামারিতে কাটলো বিষাদময় ‘২০২০’

২০২০ সালটি ছিলো মহামারি করোনায় জর্জরিত। বিশ্বব্যাপী ভাইরাসটির সংক্রমণ ও প্রাণহানিতে কেটেছে বিষাদময় একটি বছর। স্থবির হয়ে যায় অর্থনীতিসহ গোটা জীবনযাত্রা। পৃথিবীটাকে স্বাভাবিক দিনে ফেরাতে চলে নিরলস গবেষণা। অন্যতম ঘটনা ছিলো বছরের শেষদিকে, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
ভোটে বাইডেনের কাছে বড় ব্যবধানে হেরেও গোঁয়ার্তুমিতে অটল থাকা ট্রাম্পের কর্মকান্ড সমালোচিত হয়েছে সব মহলেই। এছাড়া, এশিয়ার দুই পরাশক্তি চীন ও ভারতের মাঝে লাদাখ সীমান্ত নিয়ে যুদ্ধাবস্থাও ছিলো আলোচিত খবর। বছরজুড়ে, বিশ্বব্যাপী ঘটে যাওয়া শীর্ষ ঘটনা তুলে ধরা হলো।
চীনের উহান শহর থেকে ক্রমে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে যাওয়া অজানা এক ভাইরাসের উৎকন্ঠায় বছরের শুরু। সংক্রমণের খবর বাড়তে থাকে, মানুষ ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি, কয়েক মাসের মধ্যিই পুরো পৃথিবীকে ওলট-পালট করে দেবে ভাইরাসটি। ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এর নাম দেয়া হয় কোভিড-১৯। সংক্রমণরোধে প্রায় সকল দেশেই জারি করা হয় লকডাউন।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ইউরোপের ফ্রান্সে করোনায় প্রথম প্রাণহানির পর, ডিসেম্বর নাগাদ বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর মিছিল ছাড়িয়ে যায় সাড়ে ১৭ লাখ। বছরজুড়ে, সারাবিশ্বে ৮ কোটি করোনায় আক্রান্ত রোগি শনাক্ত হয়। যার মধ্যে চিকিৎসায় সেরে উঠেন সাড়ে প্রায় পৌনে ৬ কোটি।
ভাইরাস থেকে মানুষকে বাঁচাতে পৃথিবীর সর্বত্র চলে বিজ্ঞানীদের নিরলস গবেষণা। ভ্যাকসিন উদ্ধাবনের ঘোষণা দেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। অবশেষে কার্যকর টিকা হিসেবে মানুষের শরীরে প্রয়োগের অনুমতি পায়, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন। টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পর বছরের একেবারে শেষদিকে, যুক্তরাজ্যে করোনার পরিবর্তীত প্রজাতির অধিকমাত্রার সংক্রমণে, নতুন করে উদ্বেগে পড়ে বিশ্ববাসী।
ফের একে একে লকডাউনের সিদ্ধান্ত আসতে থাকে। আবারো আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় বিভিন্ন দেশ।এছাড়া, ২০২০ সালে অন্যতম শীর্ষ খবর ছিলো লাদাখ সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যকার যুদ্ধাবস্থা। সিল্ক রোড হিসেবে পরিচিত ঐতিহাসিক বাণিজ্যপথটির দখল নিয়ে, চীনের আগ্রাসী মনোভাবে কড়া প্রতিবাদ জানায় ভারতও।
দুই দেশই মাসব্যাপী সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে থাকে লাদাখ সীমান্তে। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যস্থতায় শান্ত হয় পরিস্থিতি।
এদিকে, ইউরোপের ইতালীতে অভিবাসন প্রত্যাশী বহু বাংলাদেশি নাগরিক, লিবিয়ায় পাচারকারিদের সহিংসতায় প্রাণ হারাণ। দেশটির মিজদাহ শহরে পাচারকারীদের গুলিতে ৩০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ছিলেন ২৬ বাংলাদেশি। ওই হামলায় গুরুতর জখম হন ১১ জন বাংলাদেশি অভিবাসী। অভিবাসন প্রত্যাশীদের উপর পাচারকারিদের এমন বর্বরতা, আলোচিত খবর হয় বিশ্ব গণমাধ্যমে।
টুয়েন্ট-টুয়েন্টি, বছরটির অন্যতম বড় আলোচনার বিষয় ছিলো, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যে ৫৩৮ ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ২৭৩টি পেয়ে নির্বাচিত হন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন, আর রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে যায় মাত্র ২১৪টি। ত
বে, ক্ষমতা ছাড়তে নাছোড়বান্দা ট্রাম্প, নির্বাচন হেরেও সর্বাত্মক আইনি লড়াই চালিয়ে যান। যদিও তার পক্ষে কোনো যুক্তিই শেষপর্যন্ত টেকেনি। বরং, তার একগুঁয়ে-অবান্তর অভিযোগের কারণে, তিরস্কারও জানায় মার্কিন আদালত।
মোহাম্মদ হাসিব, বাংলা টিভি