fbpx
আন্তর্জাতিকইউরোপমধ্যপ্রাচ্য

গর্ভপাত বৈধ করার সুপারিশ করেছে জার্মান কমিশন

গর্ভাবস্থার প্রথম ১২ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধ করার সুপারিশ করেছে জার্মান সরকারের নিয়োগ করা এক কমিশন৷

সিদ্ধান্তটি কার্যকর হলে তা জার্মানির জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করছে কমিশন৷

জার্মানিতে প্রচলিত আইনের ২১৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে দেশটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে গর্ভপাত একটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত৷ যদিও গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের মধ্যে গর্ভপাত করা হলে আর গর্ভবতী নারীকে কাউন্সেলিং দেওয়া হলে তাকে শাস্তি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়৷ এছাড়াও ধর্ষণের ক্ষেত্রে বা অন্তঃসত্ত্বা নারীর জীবন, শারীরিক বা মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকলে গর্ভপাতের স্পষ্ট অনুমতি রয়েছে৷

কিন্তু বিদ্যমান আইনি কাঠামোটি প্রায় ৩০ বছরের পুরনো হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এটি সমালোচিত হয়ে আসছে৷ জার্মানির বর্তমান জোট সরকারের তিন শরিক দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস (এসপিডি),  গ্রিনস এবং ফ্রি ডেমোক্র্যাটস (এফডিপি) গর্ভপাতের আইনটিকে আরও শিথিল করতে চাচ্ছে৷

সোমবার (১৫ এপ্রিল)  কমিশন তাদের সুপারিশ পেশ করে গর্ভপাতের উপর পুরোনো সাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে৷এস. পি. ডি-র রাজনীতিবিদ কাটইয়া মাজট মনে করেন, এই সুপারিশ নেওয়া হলে সুনির্দিষ্ট সময়ের আগে গর্ভপাত আর ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে না৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি গর্ভপাত সম্পর্কিত বিধিমালা ফৌজদারি আইনের অন্তর্গত নয় কারণ, আমার দৃষ্টিতে এটি নারীদের কলঙ্কিত করে৷”

ক্যাথলিক চার্চের উদ্বেগ : ধর্মীয় গোষ্ঠী ও সংগঠনগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে৷ বার্লিনের ক্যাথলিক আর্চবিশপ হেইনার কখ ক্যাথলিক সংবাদ সংস্থাকে  বলেছেন তারা বিদ্যমান আইনটি বহাল রাখাতেই আগ্রহী৷ আর্চবিশপের মতে ‘‘প্রচলিত আইনি কাঠামোটি মায়ের চাহিদা, উদ্বেগ এবং অনাগত সন্তানের সুরক্ষা সবগুলো বিষয়কেই গুরুত্ব দেয়৷”

জার্মান ক্যাথলিকদের কেন্দ্রীয় কমিটি এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে৷ তারা মনে করেন এটি গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্রুণের সুরক্ষা নষ্ট করবে৷ অপরদিকে  ‘প্রো ফ্যামিলিয়া’ নামের একটি সংস্থা নতুন সুপারিশগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে৷

রক্ষণশীল দলগুলো যথারীতি এর বিরোধিতা করেছে৷ জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) নেতা ফ্রেডরিখ মেরজ সমালোচনা করে বলেছেন এই ধরনের সংস্কারের মাধ্যমে সরকার ‘দেশে একটি বড় সামাজিক দ্বন্দ্ব চালু করতে যাচ্ছে৷’

ডানপন্থি জনপ্রিয় দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)-ও এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে৷ অন্যদিকে সমাজতান্ত্রিক বাম দল সরকারকে সুপারিশগুলোকে একটি খসড়া আইনে পরিণত করে উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে৷

গর্ভপাতের ওপর ‘বিজ্ঞাপনের নিষেধাজ্ঞা‘ ইতিমধ্যেই প্রত্যাহার:সরকার ইতিমধ্যে গর্ভপাত সম্পর্কিত অন্যান্য সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা শুরু করেছে৷ প্রচলিত আইনের ২১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, গর্ভপাতের বিজ্ঞাপনের উপর নিষেধাজ্ঞাও ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে৷ ‘সাইডওয়াক হ্যারাসমেন্ট’ নামে পরিচিত একটি নিষেধাজ্ঞা আইন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পথে রয়েছে৷ ডয়চে ভেলে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। বাংলা টিভি

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button