fbpx
বাংলাদেশ

‘বঙ্গবন্ধুর রেণু’র লোগো ও ওয়েবসাইট উন্মোচন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব রেণু’র জীবন ও কর্মভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘বঙ্গবন্ধুর রেণু’-এর লোগো ও ওয়েবসাইট উন্মোচন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ।

এই শৈল্পিক আয়োজনের প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি । হাসুমণি’র পাঠশালা নিবেদিত ও মারুফা আক্তার পপি’র পরিচালনায় নির্মিত হচ্ছে এ চলচ্চিত্র।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন, আমাদের বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু করার জন্যে যিনি সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন তিনি বঙ্গমাতা। ৩০৫৩ বঙ্গবন্ধু কারাগারে ছিলেন, যখনই কারাগারে যেতেন তখন বঙ্গমাতা একটা নোটবই, খাতা-কলম। এজন্যই আমরা পেয়েছি ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’সহ বিভিন্ন বই। পুলিশের কাছে থাকা তথ্য দিয়েও আমরা বই আকারে প্রকাশ করবো।

এসময় বঙ্গমাতা সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় বঙ্গমাতা আমাদের বললেন, তোমরা আরও আন্দোলন তীব্র করো। তাহলে বঙ্গবন্ধুকে দ্রুত মুক্তি দিবে। তার দূরদর্শী চিন্তা এমনই ছিল। আমাদের ছাত্রনেতারা মাঝেমধ্যেই বঙ্গমাতার কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে যেতাম। ৭ মার্চের ভাষণ বঙ্গবন্ধু যখন শুরু করলেন অনেকে স্লিপ দিয়েছিলো তিনি সেগুলো চশমার নীচে রাখলেন। তারপর তিনি ভাষণ শুরু করলেন নিজের মতো করে। এ ভাষণ শুধু বাংলাদেশের নয়, এখন সারাবিশ্বের সম্পদ। বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে এটাই বলেছিলেন ভাষণটি নিজের হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করলে যেটা আসে সেটদয় দিতে।

এ শৈল্পিক আয়োজনের উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। উদ্বোধকের বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজা রামমোহন রায়ের সময় বাংলায় রেনেসাঁ হয়। কিন্তু এদিকে (পূর্ব বাংলা) রেনেসাঁ এসেছে একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে। বেগম রোকেয়ার পিছনে যেমন ছিলেন তার স্বামী তেমন বঙ্গবন্ধুর পিছনে সর্বদা সহযোগিতা নিয়ে ছিলেন বঙ্গমাতা। ৭ মার্চের বক্তব্যের আগে যখন বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতাকে জিজ্ঞেস করেন এতো গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে কী বলবো, তখন বঙ্গমাতা বললেন তুমি এতোদিন যা বিশ্বাস করে এসেছো সেটায় বলো। বঙ্গমাতার ছিলো এতো আত্মমর্যাদা, সেটা ইন্দিরা গান্ধীর সাথে তার ছবিটা গভীরে দেখলে বোঝা যায়।

শিল্পী শাহাবুদ্দিন আরও বলেন, টাকা দিয়ে সব হয় না, হলে বিশ্বের ধনীরা সব শিল্প সাহিত্যের মালিক হয়ে যেতো। শিল্পের জগতে এসে এ সিনেমা নির্মাণে হাত দেওয়ার জন্যে মারুফা আক্তার পপি’কে অসংখ্য ধন্যবাদ।

চলচ্চিত্র’টির পরিচালক মারুফা আক্তার পপি বলেন, বঙ্গমাতার প্রখর দৃষ্টিভঙ্গি ও দৃঢ়তা আমাকে এতো বেশি মুগ্ধ করেছে তার পরে এ সিনেমা তৈরির পরিকল্পনা মাথায় এসেছে। টুঙ্গিপাড়ার খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু তারপর জাতির পিতা হওয়ার পিছনের শিল্পী হচ্ছেন বঙ্গমাতা। এই বার্তাটা নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে দিতে চায়। বই পড়ে, ইতিহাস পড়ে, বঙ্গমাতার বড় মেয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি সেটা ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করবো।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সকল অনুপ্রেরণার উৎস। কিন্তু নিজে পর্দার অন্তরালে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে তখন দলের নেতাকর্মীদের আর্থিক সহয়তা করেছেন, যখন তিনি নিজেও আর্থিক সংকটে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু আগরতলা মামলায় যখন কারাগারে তখন তাকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে পাকিস্তানে আলোচনায় যাওয়ার সুযোগ আছে, সেসময় আওয়ামী লীগের নেতারাও বললেন পাকিস্তানে যেতে। কিন্তু বেগম মুজিব বললেন বঙ্গবন্ধু যাবেন না। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সহমরণেও গিয়ে তিনি চিরঋণী করে গিয়েছেন আমাদের। বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন তখন কিছু লেখার জন্যে বারবার তাগাদা দিয়েছিলেন বঙ্গমাতা। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচাসহ তিনটি বই লেখার পিছনেও অবদান বঙ্গমাতার। নতুন প্রজন্মের যারা তাকে দেখেননি তাদের জন্যে এ চলচ্চিত্রের প্রয়োজন আছে।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও হাসুমণি’র পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপি’র সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মোর্শেদুল ইসলাম ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ম এন্ড টেলিভিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব রেণু’র জীবন ও কর্মভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘বঙ্গবন্ধুর রেণু’-এর লোগো তৈরি করেছেন সনজীব দাস অপু ও ওয়েবসাইট নির্মাণ করেছেন দেবাশীষ বিশ্বাস পাভেল।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button