দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পাঁচ মাস পার হয়েছে। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতা অনুসারে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী এবং দলগুলোর আয়-ব্যয়ের বিবরণী প্রকাশে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এটি হতাশাজনক। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে বুধবার এ কথা বলেছে।
সংস্থাটি মনে করে, এই গোপনীয়তার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি আইন অমান্য করেছে। অন্যদিকে যেসব প্রার্থী ও দল যথাসময়ে তথ্য জমা দেয়নি, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এমন তথ্য নেই। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এ ধরনের কাজ কাম্য নয়। তাই সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিংয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অবিলম্বে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (৪৪গ) ধারার নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীর নির্বাচনি ব্যয় বিবরণীর সত্যায়িত নথি নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা বাধ্যতামূলক। দাখিলে ব্যর্থ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। একই আদেশের (৪৪গগ) ধারা অনুযায়ী, নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর ব্যয় বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। এতে ব্যর্থ দলগুলোর বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানাসহ নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
এ ছাড়া আদেশের (৪৪ঘ) অনুসারে প্রার্থী ও দলের ব্যয় বিবরণীর নথি জনগণের কাছে উন্মুক্ত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার এবং নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সে হিসাবে প্রার্থীদের ব্যয় বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৭ ফেব্র“য়ারি। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ৭ এপ্রিল।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ে অধিকাংশ প্রার্থীই এবং রাজনৈতিক দল ব্যয় বিবরণীর সত্যায়িত নথি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসে জমা দেয়নি। নির্বাচন কমিশনও তথ্য জমা দিতে ব্যর্থ প্রার্থী ও দলের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এটি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ দ্বারা নির্ধারিত আইনগত বাধ্যবাধকতার এমন লঙ্ঘন, যা নাগরিকদের প্রয়োজনীয় তথ্য থেকে বঞ্চিত করছে। জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পথ বন্ধ করছে, যা গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিতে প্রতিবন্ধকতা গভীরতর ও ব্যাপকতর করছে।
বাংলা টিভি / এমএএইচ