fbpx
রাজনীতিআন্তর্জাতিকবাংলাদেশ

জেনারেল সোলাইমানি ছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি বদলের অধিনায়ক

চতুর্থ শাহাদাত বার্ষিকীতে অতিথিরা

ইরানের আল-কুদস ফোর্সের সাবেক প্রধান ও বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ছিলেন অত্যন্ত সাহসী ও বিচক্ষণ সমরবিদ। তিনি কখনো মত্যুকে ভয় পেতেন না। ইরান-ইরাক যুদ্ধে গৌরবজনক ভূমিকা পালনের পর থেকে তার ক্রমান্বয়ে উত্থান হতে থাকে। ধীরে ধীরে তিনি একজন মহাসমরনায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি ছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি বদলে দেয়ার অধিনায়ক।

জেনারেল কাসেম সোলায়মানির চতুর্থ শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

‘জেনারেল সোলাইমানি: সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বিশ্ববীর’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেযা মীর মোহাম্মাদীর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম।

ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক ইনকিলাবের সহকারি সম্পাদক জামালউদ্দিন বারী। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ছিলেন অত্যন্ত সাহসী ও বিচক্ষণ সমরবিদ। তিনি কখনো মত্যুকে ভয় পেতেন না। তাকে বলা হতো জীবন্ত শহীদ। তার মতো এমন সমরবিদ এই সময়ে মুসলিম বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই । গেরিলাযুদ্ধ কাকে বলে তা তিনি বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আজকে ফিলিস্তিনের হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহর যে শক্তিমত্তা আপনার লক্ষ্য করছেন তার পেছনে মূল শক্তি জুগিয়েছেন জেনারেল কাসেম সোলাইমানি।

ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেযা মীর মোহাম্মাদী বলেন, জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ছিলেন একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান একজন মানুষ। তিনি যা কিছু করেছেন তা কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করেছেন। যে কারণে আল্লাহ তাকে এতো বড় করেছেন। তিনি আল্লাহর দিনকে রক্ষার জন্য অস্ত্র ধরেছেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাহসী, বিচক্ষণ, প্রজ্ঞাবান ও কৌশলী সমরবিদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জেনারেল কাসেম সোলাইমানি একজন কৌশলী সমরবিদ ছিলেন। ইরান-ইরাক যুদ্ধে গৌরবজনক ভূমিকা পালনের পর থেকে তার ক্রমান্বয়ে উত্থান হতে থাকে। ধীরে ধীরে তিনি একজন মহাসমরনায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন। ১৯৯৮ সালের পর থেকে তিনি কুদস ব্রিগেডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শুরু করেন। তিনি দেশের বাইরেই বিভিন্ন ফ্রন্টে ব্যস্ত থাকতেন বেশি। বিশ্বের বড় বড় জেনারেল তাকে বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করেছেন এবং তার কৌশলগত অতুলনীয় সক্ষমতাকে স্বীকার করেছেন।

সেমিনারের প্রবন্ধকার দৈনিক ইনকিলাবের সহকারি সম্পাদক জামালউদ্দিন বারী বলেন, জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ছিলেন তার সময়কালে দুনিয়ার এক নম্বর জেনারেল। মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাস নির্মূলে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।তিনি ছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি বদলে দেয়ার অধিনায়ক।

জামালউদ্দিন বারী তার প্রবন্ধে বলেন, জেনারেল সোলায়মানি শুধু প্রতিরোধ বাহিনীর গাইড লাইনই দেননি, নিজের উন্নত চিন্তা, ইমানি জজবা এবং অকুতোভয় সংগ্রামী চেতনাকে তার নির্দেশিত প্রতিটি বাহিনীর যোদ্ধাদের মধ্যে উজ্জীবিত করতেও সক্ষম হয়েছেন। এটিই বিশ্বের অন্য সব সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে জেনারেল কাসেম সোলাইমানির বড় পার্থক্য টেনে দেয়।

তিনি আরো বলেন, জেনারেল সুলাইমানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্ব হচ্ছে, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিবদমান মুজাহিদ গ্রুপগুলোকে আইএস বিরোধী যুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।পশ্চিমা সমরশক্তি ও গতানুগতিক যুদ্ধ কৌশলকে ব্যর্থ করে দিতে এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে। বিশ্বের এক নম্বর জেনারেল ও সমরবিদ কাসেম সুলাইমানির মধ্যে যে অসামান্য দূরদৃষ্টি, উচ্চতর মনুষ্যত্ববোধ, আধ্যাত্মিক চেতনা ও নিরলস কর্মবীরের গুণাবলির সন্নিবেশ ঘটেছিল, তা মধ্যপ্রাচ্যের জায়নবাদবিরোধী প্রতিটি মুক্তিকামী সৈনিকের মধ্যে পরশ পাথরের মতো প্রভাব সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button