fbpx
বিনোদনবলিউড

চলে গেলেন উপমহাদেশের সঙ্গীত কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর

ভক্তদের অশ্রুশিক্ত করে চিরবিদায় নিলেন উপমহাদেশের সংগীত কিংবদন্তী লতা মঙ্গেশকর। ৯২ বছরের ভারাক্রান্ত জীবনের শেষ সময়ে, টানা কয়েক সপ্তাহ ভারতের মুম্বাইয়ে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন তিনি।

লতা মঙ্গেশকরের এই চিরপ্রস্থানের মধ্য দিয়ে ভারতীয় সংগীতের ইতিহাসে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো। তাঁর মৃত্যুতে ভারতে দুই দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। কিংবদন্তী এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী।

লতা মঙ্গেশকর, সর্ব ভারতীয়সহ গোটা উপমহাদেশের সংগীত জগতে নিজেই এক ইতিহাস। কয়েক প্রজন্ম ধরে শত শত কোটি মানুষের জন্য অনবদ্য সব গান উপহার দিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ী এই শিল্পী ৯২ বছর বয়সে এসে, হার মানলেন প্রকৃতির কাছে।

কিংবদন্তী লতা মঙ্গেশকর টানা প্রায় চার সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর সকালে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে রোববার সকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এর আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার এই সংগীত শিল্পীকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে আর ফেরা হয়নি ভারতবর্ষের কিংবদন্তী এই কোকিলকণ্ঠীর।

তাঁর চিরপ্রস্থানের মধ্য দিয়ে ভারতীয় সংগীতের ইতিহাসেই যেন একটি অধ্যায়েরও সমাপ্তি হলো। তবে তাঁর গাওয়া গান বেঁচে থাকবে যুগ যুগ ধরে।

লতা মঙ্গেশকরের জন্ম ১৯২৯ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর ভারতের মধ্য প্রদেশে। তাঁর বাবা পন্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী। বাবার মৃত্যুর পর মাত্র ১৩ বছর বয়সেই পরিবারের হাল ধরার জন্য পেশাদার শিল্পী হিসেবে গান গাওয়া শুরু করে লতা। ভারতীয় সংগীত অঙ্গনে তাঁর গান মন ছুঁয়ে গেছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। কিংবদন্তী এ শিল্পী কণ্ঠ দিয়েছেন ৩০ হাজারের বেশি গানে।

মাত্র ১৯ বছর বয়সে ‘মজবুর’ চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেয়ার মাধ্যমে ভারতীয় চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকে হাতেখড়ি হয় লতা মঙ্গেশকরের। তবে ১৯৪৯ সালে প্রখ্যাত অভিনয়শিল্পী মধুবালা অভিনীত ‘মহল’ ছবিতে তার গাওয়া ‘আয়েগা আনেওয়ালা’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।

১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গানের শিল্পী হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠে লতা মঙ্গেশকরের। এছাড়া বাংলাসহ ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষা ও বিদেশি ভাষায় গান গাওয়ার একমাত্র রেকর্ডও রয়েছে এই সুর সম্রাজ্ঞীর।

ভাষার গন্ডি ছাড়িয়ে তাঁর গান অমর হয়ে আছে দেশে দেশে। শ্রোতা ভক্তদের ভালোবাসার পাশাপাশি ভারতসহ বিশ্বজুড়ে নানা সম্মাননা ও অর্জন করেছেন লতা মঙ্গেশকর। ১৯৬৯ সালে পদ্মভূষণ, ১৯৮৯ সালে দাদা সাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯৩ সালে ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার, ১৯৯৯ এ পদ্মবিভূষণ ও এনটিআর জাতীয় পুরস্কার এবং ২০০১ সালে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ভারতরত্ন দেয়া হয় এই কিংবদন্তী শিল্পীকে।

লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে, ভারতে দুই দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার।

বাংলাটিভি/ সাকিব

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button