fbpx
বাংলাদেশআন্তর্জাতিকএশিয়া

ইরানের ইসলামি বিপ্লব নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে

ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৫তম বিজয় বার্ষিকী  উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় বক্তারা

ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৫তম বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমেদ চৌধরী অডিটরিয়ামে এ সভা করা হয়।  ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘ইরানের ইসলামি বিপ্লব ও এর নয়া বার্তা’ শীর্ষক  এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সিলর সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহাম্মাদীর সভাপতিত্বে  এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইরানের আল-মুস্তাফা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আলী আব্বাসী, বাংলাদেশে অবস্থিত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভূশি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান।

এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান ও বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মাওলানা ড. মোহাম্মদ কফিলুদ্দিন সরকার সালেহী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে  আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ইরানের ইসলামি বিপ্লব দুনিয়ার মুসলমানের কাছে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সমগ্র মানবতার কাছে এক নুতন দিগন্ত উন্মোচন করে। ঐতিহাসিক এই বিপ্লবের ৪ দশকের সাফল্য এখন চোখে পড়ার মতো। দশকের পর দশক ধরে চলমান নানা ষড়যন্ত্র ও কঠিন অবরোধের মধ্যেও বিশ্বের অনেকের চেয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে দেশটি।

তিনি আরও বলেন, আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রেও ইরান বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে শক্তিশালী অবস্থান বলে দিচ্ছে- দেশটি কতটা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। শিক্ষা, বিজ্ঞান, উদ্ভাবন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন নেতৃস্থানীয় দেশের তালিকায় রয়েছে ইরান।

‘বিশেষ করে আবিষ্কার ও উদ্ভাবন, ন্যানো প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সাবমেরিন বা ডুবো জাহাজ শিল্প, এ্যারোস্পেস, সামরিক ও বেসামরিক বিমান শিল্প, কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশ সংক্রান্ত প্রযুক্তি, চিকিৎসা  এবং কৃষিতেও বিশ্বসেরা ১০টি দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে আজকের ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান।’ যোগ করেন মন্ত্রী।

এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, ইমাম খোমেইনী (র.) এর নেতৃত্বে ইরানের ইসলামী বিপ্লব রেজা শাহ পাহলাভির দু:শাসন থেকে দেশটির জনগণকে মুক্ত করেছিল। কিন্তু এই বিপ্লবের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ষড়যন্ত্র হয়েছে, মিথ্যাচার হয়েছে এবং এখনও এসব ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার চলছে। তবে শত্রুদের এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মুসলমানদের এক্যবদ্ধ হতে হবে।  এছাড়াও বিশ্বের নির্যাতিত বঞ্চিত মানুষদের পথ দেখিয়ে চলেছে ইরানের ইসলামী বিল্পব।

রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভূশি বলেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লব দেশটিকে বিশ্বের মাঝে নতুন অঙ্গিকে তুলে ধরেছে। আলো আসলে যেমন অন্ধকার দূরিভূত হয়, তেমনি সত্য প্রতিষ্ঠিত হলে অন্যায়-অসত্যও দূরিভূত হয়। ইরানের ইসলামী বিপ্লব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্যকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে।

উপাচার্য ড. আলী আব্বাসী বলেন, বস্তুবাদী চিন্তাধার উর্ধ্বে উঠে মহান আল্লাহ দেখানো পথের উপর ভিত্তি করে ইরানে ইসলামী বিপ্লব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই দেশটি এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে চোখ ধাঁধানো সাফল্য অর্জন করেছে। সম্প্রতি মহাকাশে একসঙ্গে ৩টি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে ইরান। দেশটির প্রয়োজনীয় ওষুধের ৯৮ শতাংশ এখন নিজেরাই তৈরি করছে। ইসলামী বিপ্লবের পূর্বে ইরানের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫৪ শতাংশ। বিপ্লবের পরে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতির ফলে দেশটির জনগণের গড় আয়ু এখন ৮৬.৫ শতাংশ।

সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহাম্মাদী বলেন,ইরানে যখন ইসলামী বিপ্লব হয়, তখন সারা বিশ্বে ব্যাপক হৈচৈ পড়ে যায়। বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমগুলোর শীর্ষ খবরে স্থান পায় ইরানের ইসলামী বিপ্লব। কারণ এই বিপ্লবে নতুন বার্তা ছিল, যা বিশ্বকে আকৃষ্ট করেছে। তা না হলে এই বিপ্লব সারা বিশ্বে এমন সাড়া জাগাতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, দিন বিবর্জিত কোন মতধারা মানুষকে মুক্তি দিতে পারে না। একমাত্র সত্য ও ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত মতাবাদই মানুষকে মক্তি দিতে পারে, যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ ইরানের ইসলামী বিপ্লব।

এসআর/বাংলা টিভি

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button